ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ মানে উত্তেজান চরমে থাকে। সবার মাঝে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। ভারত বনাম পাকিস্তানের দ্বৈরথ শুধু ক্রিকেট মাঠেই সীমাবদ্ধ থাকে এইটা ছড়িয়ে পড়ে ক্রিকেট কিংবা গণমাধ্যমের সুড়সুড়িতেও। পাকিস্তানি গণমাধ্যম যেমন ভারতীয়দের ভুল খুঁজতে আতশি কাঁচ নিয়ে বসে থাকে, ঠিক একইভাবে ভারতীয় গণমাধ্যমও পাকিস্তানিদের পান থেকে চুন খসলেই লিখে ফেলে খবরের শিরোনাম।
তবে দু:খের বিষয় হলো এখন ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ দেখা যায় না। না গেলেও একসময় নিয়মিতই হত দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের লড়াই। আর সে সময় যেন পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের দুর্নাম না হয়, তাই অভিনব এক পদক্ষেপ নিয়েছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। ২০১২-১৩ মৌসুমে শেষবারের মত ভারত সফরে গিয়েছিল পাকিস্তান। তখন পিসিবির চেয়ারম্যান ছিলেন জাকা আশরাফ। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, ঐ সফরে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সাথে জোর করে পাঠানো হয়েছিল প্রত্যেকের স্ত্রীকে, যেন ভারতে তাদের নিয়ন্ত্রিত রাখা যায় আর এড়ানো যায় সব ধরনের বিতর্ক।
জাকা আশরাফ বলেন, ‘আমার আমলে যখন ভারত সফরে গিয়েছিল আমাদের দল, তখন সব খেলোয়াড়দের সঙ্গে স্ত্রীদের যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। যাতে কোনোরকম বিতর্ক তৈরি না হয়, সেজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে তো সারাক্ষণ বিতর্কের খোঁজে থাকে। খেলোয়াড়দের উপর নজর রাখতে তাদের সাথে স্ত্রীদেরও পাঠানো হয়েছিল।’
জাকা আশরাফ নিজ দেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে কোনো সন্দেহ না রাখলেও ভারতীয় গণমাধ্যমের বাড়াবাড়ির কারণেই এমন পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল বলে জানান তিনি। জাকা আশরাফ বলেন, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড় বিষয়টি ভালোভাবেই নিয়েছিল এবং সে অনুযায়ী ভারত সফরে গিয়েছিল। প্রত্যেকেই শৃঙ্খলা মেনে চলেছিল। যখনই পাকিস্তান ভারত সফরে যেত, তখনই ভারতের সংবাদমাধ্যম আমাদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করত এবং আমাদের খেলোয়াড় ও দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করত। তাই সেটা এড়িয়ে চলা হয়েছিল।’
সেই সফরের পর ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আর দেখা যায়নি, যা ক্রিকেট প্রেমীদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ। জাকা আশরাফ মনে করেন, দুই ক্রিকেট বোর্ডের দূরত্ব ঘোচাতে হলে আগে কমাতে হবে দুই দেশ ও রাষ্ট্রের দূরত্ব।
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটের দিক থেকে সর্বদা আমাদের ভারত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টা করতে হবে। একটি ছোটো সিরিজের জন্য বিসিসিআই একবার আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আমি তত্কালীন বিসিসিআই সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সম্পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করলে পাকিস্তানের মাটিতে ভারত খেলবে বলে কিন্তু তিনি প্রতিজ্ঞাও করেছিলেন।’