
চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে বুধবার রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৩-১ গোলের দারুণ এক জয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ১৩বারের চ্যাম্পিয়নদের জয় ৩-২ গোলের। ফিরতি লেগে দুর্দান্ত এক হাটট্রিকে মেসি-নেইমারদের স্বপ্ন ভেঙে দিলেন করিম বেনজেমা।





যদিও দ্বিতীয় লেগে প্রথমার্ধে কিলিয়ান এমবাপ্পের গোলে এগিয়ে যায় পিএসজি। কিন্তু বেনজেমা তাদের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে দেন। বিরতির পর ১৮ মিনিটের ঝলকে হ্যাটট্রিক করেন এই ফরাসি। তবে রিয়ালের প্রথম গোলে অভিযোগ তোলেন পিএসজি কোচ মরিসিও পচেত্তিনো ও ক্রীড়া পরিচালক লিওনার্দো। আর পিএসজির চেয়ারম্যান নাসের আল-খেলাইফি তো ক্ষোভেই ফেটে পড়েন। শেষ বাঁশি বাজতেই রেফারিদের ড্রেসিংরুমে ছুটে গেছেন পিএসজি চেয়ারম্যান।





এ বিষয়ে স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা লিখেছে, শেষ বাঁশির পর ভিআইপি বক্স থেকে সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত নেমে যান আল-খেলাইফি। রেফারিদের ড্রেসিংরুম কোন দিকে, সেটি জিজ্ঞেস করতে দেখা যায় তাকে। এ সময় আল-খেলাইফির চোখমুখ লাল হয়েছিল। এতটাই রেগে ছিলেন আল-খেলাইফি যে, রেফারিদের কক্ষের বদলে ভুল করে রিয়াল মাদ্রিদেরই প্রতিনিধি মেহিয়া দাভিলার কক্ষে ঢুকে পড়েন তিনি। সেখান থেকে তাকে বের করে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে বলেও লিখেছে মার্কা। তিনি ম্যাচে রেফারিদের সিদ্ধান্তে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, রিয়ালের প্রথম গোলের সময় পিএসজি গোলরক্ষক জুয়ানলুইজি ডনারুম্মাকে ফাউল করেছিলেন বেনজেমা।





ম্যাচশেষে লিওনেল মেসিদের কোচ বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে অনেক বড় অবিচার হয়েছে। ডনারুম্মাকে করা বেনজেমার এটা পরিষ্কার ফাউল ছিল। আমাদের আবেগের অব্স্থা বদলে গিয়েছিল ওই গোলের পর, আমরা অনেক বেশি উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছি। এটা আমাদের জন্য বড় আঘাত ছিল কারণ আমরা এই পর্বে ভালো দল ছিলাম। ১৮০ মিনিট ধরে ভালো খেলেছি। রিয়ালের ১-১ এ কিছু হারানোর ছিল, তাই তারা সবকিছু নিয়ে এসেছে।’ এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ভিএআরে না দেখায় হতাশা প্রকাশ করেন পচেত্তিনো, ‘এটা ডনারুম্মার ভুল ছিল না কারণ পরিষ্কার ফাউল করা হয়েছে। আমি ৩০-৪০ বার দেখেছি ওই ফুটেজ, সব অ্যাঙ্গেল থেকে। এটা গোলরক্ষকের ভুল না, ফাউল। ছোট বিষয়গুলোও হিসাবে নেওয়া হয় আর ভিএআর এমন নিশ্চিত ফাউলে দেখা হলো না। এটা নির্ধারক হয়ে গিয়েছে কারণ এই সিদ্ধান্ত দুই দল ও সমর্থকদের প্রভাবিত করেছে। ওই মুহূর্ত পর্যন্ত ম্যাচটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল।’





ওই সিদ্ধান্তই দলের অবস্থা বদলে দিয়েছে বলে বিশ্বাস পচেত্তিনোর, ‘হ্যাঁ, এরপর আমরা কয়েকটা ভুল করেছি, সেটা মেনে নিতে হবে। কিন্তু যখন আবেগ থাকে, ফুটবল বদলে যায়। এমন একটা ঘটনার পর দলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। এটা আমাদের সঙ্গে ঘটতে পারে, এমন জঘণ্য কাজ। এমন ফল মেনে নেওয়াটা খুব কঠিন।’
যদিও ম্যাচশেষে নিজে কোনো ভুল করেননি বলেই দাবি করেছেন বেনজেমা। তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো ভুল করিনি। সে অনেক সময় নিচ্ছিল, আমি তাকে চাপ দিয়েছি, সে বল হারিয়েছে।’