বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরে গতকাল ১৪ ফেব্রুয়ারি সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে রংপুর হেরেছে চরম ভাবে। এই হারে আর ফাইনাল খেলা হচ্ছে না রংপুর রাইডার্সের। ম্যাচ হারের পর যারপরনাই হতাশ রংপুর। একইসাথে সিলেটের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সময় নষ্টের অভিযোগও করেছে তারা।
রংপুরের অভিযোগের পুরোটাই শুধু মাশরাফির জন্য মুশফিকুর রহিম কেন্দ্রিক। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মুশফিক দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে মাঠে নামেননি। তিনি না থাকায় ১৭ ওভার পর্যন্ত উইকেটকিপিং সামলেছেন দলটির ব্যাক-আপ কিপার আকবর আলী।
ম্যাচের এক পরজয়ে যখন মুশফিক মাঠে নামেন, তখন জাকির হাসানকে উইকেটকিপিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। এই ম্যাচে কিপার বদলের পুরো ঘটনায় প্রায় ৫-৬ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। ১৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় সেই সময়টায় ১৮ বলে ৩৩ রান দরকার ছিল রংপুরের।
রংপুরের রনি তালুকদার ও নুরুল হাসান সোহান তখন পর্যন্ত ৫১ বলে ৮২ রান করে ফেলেছিলেন। অথচ সেই বিরতির পর প্রথম বলেই আউট হয়ে যান সোহান। ২৪ বলে ৩৩ রানে থামে তার ইনিংস। দুই বল পর রানআউট হয়ে ফিরে যান ৫২ বলে ৬৬ করা রনি তালুকদার।
আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি রংপুর। ১৯ রানে ম্যাচ হেরে বিদায় নিয়েছে দলটি। রংপুরের কোচ সোহেল ইসলামের দাবি, সময় নষ্টের কারণেই মূলত সে সময় দলটির রান তাড়ায় ছন্দপতন হয়।
তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি খেলা মোমেন্টামের খেলা। শেষ ৫ ওভারে, ১৬-১৭-১৮ নম্বর ওভারগুলোয় আমরা ওভাবে খেলতে পারিনি, রান যেভাবে দরকার ছিল…। ওই জায়গাটায় আমাদের মোমেন্টাম নিচের দিকে ছিল। তার পরও ১৮ বলে ৩৩ রান সম্ভব ছিল। কিন্তু আমরা ওই জায়গাটা সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি।’
‘ওই সময়টায় খেলার মোমেন্টাম আমাদের দিকে ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় জাকির বের হলো (কিপিং প্যাড, গ্লাভস পরতে)। উইকেটকিপার বদল হলো। একটা মোমেন্টাম শিফট ছিল। খেলার একটা ফ্লো ছিল। ওই সময় মোমেন্টাম আসলে ব্রেকডাউন হয়ে যায়। এটা টি-টোয়েন্টিতে একটা দলের জন্য একটা যখন ফ্লো থাকে, তখন সেটা বাধাগ্রস্ত হলে এ রকম হতে পারে (ধস)। সেটাই হয়েছে।’
সোহান আউট হয়ে ফিরে যেতেই ড্রেসিংরুমে গিয়ে তাকে সতীর্থদের সঙ্গে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়। কিপার বদলানোর এই ঘটনা মানতে পারেননি রংপুরের অধিনায়ক। পুরো ঘটনাটি মোমেন্টাম নষ্টের জন্য সিলেট দলের পরিকল্পনা কিনা সেটা জানতে চাওয়া হলে সংশয় প্রকাশ করেন সোহেল।
তিনি আরও বলেন, ‘সে (সোহান) আমাদেরকে বলছিল যে, কেন আমরা ওই সময়টায় বলিনি যে আরও তাড়াতাড়ি যেন খেলাটা শুরু হয়। আমি আসলে জানি না, এটা ট্যাকটিকস ছিল কি না বা কিছু… কিন্তু যেটা হয়েছে, মুশফিক ব্যাটিং করেছে। আমি তৃতীয় আম্পায়ারকে জিজ্ঞেস করেছি যে, কিসের জন্য সে বাইরে আছে (ফিল্ডিংয়ের সময়)। তারা বলছে যে, তার জ্বর আসছে, এজন্য বাইরে। আমার কথা হচ্ছে যে, জ্বর যখন আসবে, তার দায়িত্ব কি অন্য দল নেবে? নিশ্চয়ই নয়! সেই ব্যাপারটি নিয়েই কথা হচ্ছিল।’
‘পরবর্তীতে মুশফিক ডখন নামে, তখন বেশ কিছু সময় চলে যায়। এক-দুই মিনিটের ব্যাপার নয়, প্রায় ৫-৬ মিনিটের ব্যাপার ছিল। ওই সময়টায় আমরা ভালো অবস্থায় ছিলাম। একটা ফ্লো ছিল। এই ফ্লো নষ্ট হয়ে যাওয়াটা আমাদের জন্য ক্ষতিকর ছিল।’