ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা পেলে আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্রাজিলিয়ান এ মহাতারকা হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি এদসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তো বিশ্বজুড়ে পরিচিত পেলে নামেই। তাকে ধরা হয় সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন।
পেলে সাও পাওলোর অ্যালবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। টানা ২৯ দিন পর লড়াই থামল ‘কালো মাণিক’-এর। চিকিৎসকরা বলেই দিয়েছিলেন তাঁর ক্যান্সার একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে গিয়েছে। কোনও চিকিৎসাই কাজ দিচ্ছিল না।
কাতারে বিশ্বকাপের মধ্যবর্তী সময়েই শোনা গিয়েছিল পেলে একেবারেই ভাল নেই। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে এতটাই গোপনীয়তা অবলম্বন করা হয়েছে যে, সারা বিশ্বে তাঁর অগণিত ভক্তরাও ধোঁয়াশায় ছিলেন। মেয়ে কেলি যেদিন হাসপাতালে বাবার শয্যার পাশে ছিলেন সেদিনই বোঝা গেছিল পেলে একেবারেই ভাল নেই। দেখা গিয়েছে অশক্ত শরীরে মেয়েকে আঁকড়ে রয়েছেন কিংবদন্তি।
শুধু তাই নয়, তাঁর নাতনিকে দেখা গিয়েছিল হাসপাতালেই পেলের কেবিনের বেডে শুয়ে রয়েছেন। পরিবারের সদস্যরা বুঝে গিয়েছিলেন, পেলেকে আর কোনও চিকিৎসাতেই ফিরিয়ে আনা যাবে না। যদিও চিকিৎসকরা চেষ্টা করেছিলেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু প্রথমত ক্যানসার, আর দ্বিতীয়ত, বার্ধক্য তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে গেল।
মাঠে বল পায়ে তাঁর আক্রমণ বিপক্ষের ডিফেন্সে কাঁপন ধরাতো, কিন্তু জীবনের শেষ কটা বছর মারণরোগের মোকাবিলায় তিনি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। কোলন ক্যানসারের জন্য বারবার তিনি কেমোথেরাপি নিয়েছেন। তাতে শরীর আরও দূর্বল হয়ে পড়েছিল।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের ত্রেস কোরাক্লায়েস শহরের এক বস্তিতে জন্মেছিলেন তিনি। প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ১৭ বছর বয়সে। ব্রাজিলের হয়ে তিনবার বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য পেলে মানে ইতিহাস, পেলে মানে ফুটবলের এক আস্ত অধ্যায়। তাঁর জীবনবসানের সঙ্গে সমাপ্তি ঘটল এক অনন্য রূপকথার যেখানে শুধুই ফুটবল নয়, রয়েছে এক কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের আকাশ ছোঁয়ার কাহিনি, কোটি কোটি হেরে যাওয়া মানুযের চোখে স্বপ্ন বূনে দেওয়ার আখ্যান।
সুত্রঃ সময়ের কন্ঠস্বর