বিশ্বকাপের আগে টানা ৩৬টি ম্যাচে অপরাজিত ছিলো আর্জেন্টিনা। এই সময়ের মধ্যে দলটি জয় করেছে কোপা আমেরিকা এবং ফাইনালিসিমার শিরোপাও। গতকালের ম্যাচে মাঠে নামার সময় সুযোগ ছিলো ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি ম্যাচে অপরাজিত থাকা ইতালির রেকর্ডে ভাগ বসানোর। কিন্ত স্বপ্নের বিশ্বকাপে এসেই মুখ থুবড়ে পড়লো দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।





গতকাল কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে উড়ন্ত আর্জেন্টিনাকে মরুর বুকে নামিয়ে এনেছে সৌদি আরব। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ফুটবল দুনিয়ার অন্যতম সেরা পরাশক্তিদের থমকে দিয়ে জয় তুলে নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।
সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচ জুড়ে যদিও ছড়ি ঘুরায় আর্জেন্টিনায়। শুরুতে এগিয়েও যায় তারা দলপতি লিওনেল মেসির পেনাল্টি থেকে।





এগিয়ে যাওয়ার পর থেমে থাকেনি দলটি। আরও তিনবার বল জালে পাঠায় লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। কিন্ত তিনবারই ভাগ্যের ফের হয়ে সামনে আসে সেমি অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি। যেখানে তিনটি গোলই অফসাইডের কারণে বাতিল হয়।
গোল গুলো বাতিল হওয়ার কারণেই হয়তো আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে আর্জেন্টিনা। এরপর দ্বিতীয়ার্ধের হঠাৎ ঝড়ে মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানেই দুই গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সৌদি আরব।
এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি আর্জেন্টিনা। একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে গেলেও সেগুলো তেকাঠি আর পার হয়নি। যার ফলস্বরূপ হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় আলবেসিলেস্তেদের।





আর্জেন্টিনার এই আকস্মিক ছন্দপতনে হতবাক গোটা ফুটবল দুনিয়া। অনেকেই ২০০২ সালের বিশ্বকাপের সাথে এবারের আসরের সাদৃশ্য খুঁজে পাচ্ছেন। সেবারও শক্তিশালী এক দল নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে এসে গ্ৰুপ পর্বের বাঁধায় পার হতে ব্যর্থ হয় আর্জেন্টিনা।
যদিও এখনো আশায় বুক বাঁধতে পারে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। কেননা গতকালই হয়ে যাওয়া গ্ৰুপের আরেক ম্যাচে ড্র করেছে পোল্যান্ড এবং মেক্সিকো।





বর্তমানে সমান একটি করে ম্যাচ খেলে গ্ৰুপের শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব। আর্জেন্টিনার অবস্থান একেবারে তলানিতে। ১ পয়েন্ট করে অর্জন করে মেক্সিকো এবং পোল্যান্ড রয়েছে দুই ও তিন নম্বর স্থানে।
যে কারণে এখনো আর্জেন্টিনার সমানে সুযোগ রয়েছে গ্ৰুপ সেরা হওয়ার। নিজেদের পরবর্তী দুই ম্যাচে যদি আর্জেন্টিনা জয় পায় তাহলেই তৈরি হবে দলটির গ্ৰুপ সেরা হয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছানোর পথ।
সেক্ষেত্রে অবশ্য তাকিয়ে থাকতে হবে সৌদি আরবের ম্যাচের রেজাল্টের দিকেও। পোল্যান্ড এবং মেক্সিকোর সাথে সৌদি আরব জয় না পেলে, এবং নিজেদের বাকি দুই ম্যাচে জয় তুলে নিতে পারলেই গ্ৰুপ সেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে যাবে আর্জেন্টিনা।