কাতার বিশ্বকাপ জিতবে আর্জেন্টিনা; দেখেনিন কারন সমুহ

InCollage 20221112 132636123

দরজায় কড়া নাড়ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। আগামী ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে ‍শুরু হচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের জমজমাট এ আসর। গত বিশ্বকাপে বাছাইপর্বই পেরুতে হয়েছে নানা কসরত করে। বিশ্বকাপেও ফর্ম ছিল যাচ্ছেতাই। তবে ২৮ বছর পর শিরোপা খরা থাকার গত বছর ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেন লিওনেল মেসিরা। পরে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে হারিয়ে ফিনালিস্সিমা জয়ের পর বেড়েছে তাদের আত্মবিশ্বাস। উড়ন্ত এই পারফরম্যান্সের জোরে তাই কাতার বিশ্বকাপে ফেভারিটের তালিকায় আছে আর্জেন্টিনা।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

কোপা আমেরিকা জয়ের পর থেকেই আর্জেন্টিনা সমর্থকদের উচ্ছাস বেড়েছে। ফিনালিসসিমায় ইতালিকে হারানোর দিনে দেখা গেছে ডি মারিয়াদের শক্তিমত্ত্বা। তারপর থেকেই ফের লিওনেল মেসির দল বিশ্বকাপের ফেভারিটের তালিকায় উঠে আসে। এর বাইরেও এবার আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জেতার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তবে বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টের সময় যত ঘনিয়ে আসছে তত বাড়ছে শঙ্কাও। সেসব নিয়েই এই প্রতিবেদন।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

মাঠের মেসি নির্ভার : চলতি বছরে দলে লিওনেল মেসির উপস্থিতির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা বাতুলতা। ফর্মে থাকলে দলের জন্য মেসি যে কত বড় সম্পদ, এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। গত বছর কোপা আমেরিকা জিতে সংশয়বাদীদের সে প্রশ্নও থামিয়ে দিয়েছেন। বাকি এখন শুধুই বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপ জেতার জন্য মেসি যে কতটা ব্যাকুল, সেটা তাঁর খেলার ধরন দেখলেও বোঝা যায়। মেসির সৌভাগ্য, আগে যেমন আর্জেন্টিনার অন্যান্য খেলোয়াড়েরা মেসির পায়ে বল দেখলেই দলীয় রসায়নের কথা ভুলে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকত, এখন সেসব হয় না। আগে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে আক্রমণভাগের দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করলেও, সেভাবে প্রেসিং করতে চাইতেন না। এখন প্রয়োজনে মাঝমাঠে নেমে প্রতিপক্ষকে প্রেস করতেও দেখা যায় মেসিকে।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

মেসিকে নিচে নামতে দেখলে প্রতিপক্ষ ডিবক্সে লাওতারো মার্তিনেজ, আনহেল দি মারিয়া, নিকোলাস গঞ্জালেস, আলেহান্দ্রো গোমেজদের মধ্যে কারও না কারওর উপস্থিতি থাকেই। ফলে মেসি নেমে গেলে ওপরে উঠে গোল করার জন্য কে থাকবেন—সেটা নিয়ে চিন্তা করতে হয় না আর্জেন্টিনাকে। যা মেসিকে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে আগের চেয়ে আরও বেশি নির্ভার করেছে। আর মেসি নির্ভার থাকলে যে আন্তর্জাতিক শিরোপার খরাও ঘোচানো যায়, সেটা কোপা আমেরিকা আর লা ফিনালিসিমা জিতেই প্রমাণ করেছে আর্জেন্টিনা।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

দলে তৈরি হয়েছে ভ্রাতৃত্ববোধ : আর্জেন্টিনার হয়ে ম্যাচ খেলার জন্য খেলোয়াড়েরা যখন অনুশীলন ক্যাম্প করতে যান, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় রদ্রিগো দি পল, লিয়ান্দ্রো পারেদেস, পাওলো দিবালা, আনহেল দি মারিয়া, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো মার্তিনেজদের পোস্ট করা দলগত ছবিগুলো দলীয় ভ্রাতৃত্ববোধের জয়গান গায় যেন। প্রমাণ করে দলের খেলোয়াড়েরা অন্তত একে অন্যের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন নন, পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় তাদের। আর সবারই জানা, সুদৃঢ় সম্পর্ক যেকোনো দলীয় সাফল্যের চাবিকাঠি!

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

প্রত্যেকেই দলের একচ্ছত্র নেতা হিসেবে লিওনেল মেসিকে মেনে নিয়েছেন হাসিমুখে। মেসির জন্য এ দলের প্রত্যেকে কিছু না কিছু করে দেখানোর জন্য উদগ্রীব।

রক্ষণভাগ : দিয়েগো ম্যারাডোনার অধীন ২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে ডুবিয়েছিল জোড়াতালির রক্ষণ। ফুলব্যাক হিসেবে নির্দিষ্ট কেউ খেলতেন না। ২০১৪ সালে তেমন জোড়াতালির রক্ষণ না হলেও একাদশের ছক নিয়ে নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন আলেহান্দ্রো সাবেয়া। ৩-৫-২ ছকে টুর্নামেন্ট শুরু করা আর্জেন্টিনা এরপরই খেলা শুরু করে ৪-৩-৩ ছকে, মাঝে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষে আশ্রয় নেয় ৪-৪-২ ছকে। ২০১৮ বিশ্বকাপটাও রক্ষণের দিক দিয়ে ২০১০ বিশ্বকাপকেই মনে করিয়ে দিয়েছে।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

কিন্তু এই আর্জেন্টিনায় সে সমস্যা নেই। নিকোলাস ওতামেন্দির পাশে ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। রাইটব্যাক হিসেবে হয় নাহুয়েল মলিনা, নয় গঞ্জালো মন্তিয়েল। ওদিকে লেফটব্যাকে মার্কোস আকুনিয়া ও নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর মধ্যে যেকোনো একজন। লিসান্দ্রো মার্তিনেজ, হুয়ান ফয়থ, জার্মান পেৎসেয়ার মতো খেলোয়াড়েরা এখনও মূল একাদশের অংশ না হলেও যখনই সুযোগ পান, নিজেদের জাত চিনিয়ে দেন।

মোদ্দাকথা হলো, এ আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগে কার্যকর খেলোয়াড়ের অভাব নেই। চারজনের রক্ষণ—ছকেই নিয়মিত খেলছে আর্জেন্টিনা। আর এ খেলোয়াড়দের কখন কীভাবে ব্যবহার করতে হবে, সেটা কোচ লিওনেল স্কালোনি বেশ ভালোভাবে জানেন। প্রতিপক্ষ প্রেস করলেও পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো থাকার কারণে আর্জেন্টিনা রক্ষণ থেকে দ্রুত ওয়ান-টু করে বল বের করে আক্রমণে জোগান দিতে পারছে।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

কোচের ওপর আস্থা : আনকোরা কোচ লিওনেল স্কালোনির ওপর আস্থা রাখার ফল পাওয়া শুরু করেছে আর্জেন্টিনা। ২০১৯ সালের কোপা আমেরিকার সেমিতে হারার পর টানা ৩২ ম্যাচ অপরাজিত থাকা সেটাই বলে অন্তত। স্কালোনি মেসিদের দলগত প্রেসিং শিখিয়েছেন কার্যকর উপায়ে, যা আর্জেন্টিনার খেলা দেখলেই বোঝা যায়।

দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম থেকে একাধিক খেলোয়াড় অদল-বদল করে নিজের পছন্দমতো স্কোয়াড গঠন করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এই দলের প্রত্যেকের শক্তি-দুর্বলতা হাতের তালুর মতো চেনা তার। ৪-৩-৩ ছকের সর্বোচ্চ প্রয়োগ ঘটাচ্ছেন এই কোচ, খুব বেশি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করছেন না, খেলছেন ফলাফলনির্ভর ফুটবল, যা দিন শেষে ইতিবাচক ভূমিকাই রাখছে।

গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ : আর্জেন্টিনার গোলকিপার নিয়ে অনেকদিনের। ২০০৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে জার্মানির বিপক্ষে মূল গোলকিপার রবার্তো আবোনদানজিয়েরির চোটের পর লিও ফ্রাঙ্কো খেলতে নামেন, যে গোলকিপার পেনাল্টি শুটআউটে আর্জেন্টিনাকে কোনো সাহায্যই করতে পারেননি। এরপর এলেন সার্জিও রোমেরো। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পেনাল্টি শুটআউট ছাড়া তিনি তেমন নির্ভরতা দিতে পারেননি আর্জেন্টিনাকে। গত বিশ্বকাপে উইলি ক্যাবায়েরো ও ফ্রাঙ্কো আরমানির হাস্যকর একেকটা ভুল শূল হতে বিঁধেছে আর্জেন্টাইন ভক্তদের মনে।

তবে তাঁদের কেউই নন, কোচ স্কালোনির মূল পছন্দের গোলকিপার এখন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। আর একজন বিশ্বমানের গোলকিপার হওয়ার জন্য যা যা গুণাবলি থাকার দরকার, সবকিছুই এই মার্তিনেজের মধ্যে আছে যে সেটা গত কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল ও ফাইনালেই প্রমাণ করেছেন তিনি।

শঙ্কার নাম চোট : তবে এসবের বাইরেও আছে আছে আরেকটি কারণ। সেটা অবশ্য শঙ্কার। এই বিশ্বকাপের আগে একের পর এক চোটাক্রান্ত হচ্ছেন তারকা ফুটবলাররা। আর্জেন্টিনাতেও তা আঘাত হেনেছে একাধিক খেলোয়াড়ের মাঝে। জিওভানি লো সেলসো এবং পাওলো দিবালার চোটে ইতোমধ্যে অস্বস্তি বেড়েছে আর্জেন্টাইন দুর্গে। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে সেরা একাদশকে নিয়ে খেলতে নেমে আর্জেন্টিনা জিতবে বিশ্বকাপ, এমনটাই প্রত্যাশা দলটির সমর্থকদের।

You May Also Like