১৫ বছরের ইতিহাসকে লাড়া দিল বাংলাদেশ

ঢাকা, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২, ৯ কার্তিক ১৪২৯

FacebookGoogleTwRSS
খোঁজ করুন…

প্রচ্ছদ / খেলা / বিস্তারিত
১৫ বছরের ইতিহাস: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল২০২২ অক্টোবর ২৪ ১৩:৪৩:৩৮
১৫ বছরের ইতিহাস: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল
অপেক্ষার পালা ফুরাল। বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে আরেকটি জয় পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হল ১৫ বছর। ২০০৭ সালে প্রথম বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানো লাল-সবুজের দলটি এক যুগেরও বেশি সময় পর আক্ষেপ দূর করল নেদারল্যান্ডকে দিয়ে। ৯ রানের জয়ে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই জয় পেল বাংলাদেশ।

সাকিববাহিনী স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলতে পারেনি। তারপরও প্রতিপক্ষকে শুরুতেই চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডস ইনিংসের শুরুর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে সাকিববাহিনীকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ওপেনার বিক্রমজিত সিং ক্যাচ তুলে দেন স্লিপে, যা লুফে নেন ইয়াসির আলী রাব্বি। পরের বলে বাস ডি লিডকে ফেরান তাসকিন। উইকেটরক্ষক সোহানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলে ছক্কা খেলেও দ্বিতীয় বলে ম্যাক্স ও’ডাউডকে রান আউট করেন সাকিব। একই ওভারের চতুর্থ বলে কোন বল না খেলেই রান আউট হন টম কুপার। তবে পঞ্চম থেকে ১২তম ওভার পর্যন্ত উইকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হয় বাংলাদেশকে।

অ্যাকারম্যান ও এডওয়ার্ডস মিলে দেখে শুনেই খেলছিলেন। দলকে ৫০’র ওপরও নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে ১২তম ওভারে একবার সাকিবকে রিভার্স সুইপ করে ২ রান নিলেও, পরের বলে আবারও একই শট খেলতে গিয়ে হাসানের তালুবন্দি হন এডওয়ার্ডস। ২৪ বলে ১৬ রান করেন তিনি। পরের ওভারে প্রিঙ্গেলকে বোল্ড করেন হাসান। এর এক বল পরই ম্যাচে হানা দেয় বৃষ্টি।

খানিক পর নেমেই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন অ্যাকারম্যান। তিনি এক প্রান্তে টিকে থাকলেও বাকি ব্যাটারদের কাছ থেক সঙ্গ পাননি। দলীয় ১০০’র আগের ৮ ব্যাটার আউট হলেও দলকে জয়ের বন্দরে নিতে চেষ্টা করতে থাকেন অ্যাকারম্যান। কিন্তু তাসকিনের চতুর্থ শিকার হিসেবে ৬১ রানে মোসাদেকের তালুবন্দি হন এই ব্যাটার।

নিজের স্পেলের শেষ বলে পঞ্চম উইকেট তুলে নিতে দারুন এক ইয়র্কার ছাড়লেও তা এজে লেগে চলে যায় বাউন্ডারিতে। ২৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন তিনি। শেষ ওভারে ডাচদের বুকে শেষ পেড়েকটি ঠুকে দেন সৌম্য। ইনিংসের শেষ বলে ভান মেকেরিনকে আউট করেন তিনি। ১৩৫ রানে অল আউট হয় নেদারল্যান্ডস

বাংলাদেশের ইনিংস

উইকেট ও কন্ডিশন বিবেচনায় টসে জিতেই বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নেদ্যারল্যান্ডস অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। তবে তার সিদ্ধান্তের প্রতিদান শুরুতেই দিতে পারেননি ডাচ বোলাররা। নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার গতি ও বাউন্স সামাল দিয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন।

সৌম্য ১০০ স্ট্রাইক রেটে রান তুললেও ওপরপ্রান্তে শান্ত হাত খুলেই খেলেন। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে ভান মেকেরিনের বুক বরাবর করা বাউন্সের গতি বুঝতে না পেরে ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য। ১৪ বলে ১৪ রানে তিনি ফিরলে পরের ওভারে পঞ্চম স্টাম্প থেকে টিম প্রিঙ্গেলকে স্লগ সুইপ করতে ক্যাচ আউট হন শান্তও।

২০ বলে ২৫ রান করে আউট হন এই ওপেনার। দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসার ধাক্কা সামাল দিতে পারেননি সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। ১১ বলে ৯ রান করে ভ্যান বিককে মারতে গিয়ে ৩০ গজের ভেতর তালুবন্দি হন লিটন। খানিক পর শালিজ আহমেদকে স্লগ করতে গিয়ে বাউন্ডারিতে তালুবন্দি হন সাকিবও।

দশম ওভারে আফিফ হাঁকান ইনিংসের প্রথম ছক্কা। এরপর বৃষ্টি হানা দেয় ৫ মিনিটের জন্য। বৃষ্টি থামার পর ক্রিজে নেমে মেকেরিনের বলের লাইন বুঝতে না পেরে বোল্ড হন ইয়াসির। এরপর আফিফকে সঙ্গ দিতে নামে নুরুল হাসান। দুজন মিলে ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে নিয়ে যান শতরানের ওপর।

তাদের ব্যাটে বাংলাদেশ আরও যোগ করে ৪৪ রান। তবে ১৮তম ওভারে বাস ডি লিডকে পেছনে খেলতে গিয়ে আউট হন সোহান। দলীয় ১২০ রানে ক্রিজে নেমে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান মোসাদ্দেক। কিন্তু ওভারের শেষ বলে আফিফকেও উইকেটের পেছনে আউট করেন লিড। ২৭ বলে ৩৮ রান করে আউট হন এই ব্যাটার।

শেষ ১২ বলে বাংলাদেশের সুযোগ ছিল দেড়শ’র ঘরে পা দেয়ার। কিন্তু লোয়ার অর্ডারে নেমে তাসকিন দ্রুত রান তুলতে গিয়ে আউট হন ফ্রেড ক্লাসেনের বলে। শুন্য রানে তিনি ফিরলে পরের ৩ বলে আসেনি কোনো রান। শেষ ওভারের শুরুর ২ বলে কোন রান নেননি মোসাদ্দেক।

কিন্তু তৃতীয় বলে তার ছক্কায় বাংলাদেশ পৌছায় ১৪০’র ঘরে। শেষ ৩ বলে একবার জীবন পেয়ে এই ব্যাটার আরও যোগ করেন ৪ রান। বাংলাদেশ পায় ১৪৪ রানের পুঁজি। মোসাদ্দেক অপরাজিত থাকেন ২০ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ১৪৪/৮ (২০ ওভার) (আফিফ ৩৮, মোসাদ্দেক ২০*; ডি লিড ২/২৯)

নেদারল্যান্ডস- ১৩৫ অল আউট (২০ ওভার) (অ্যাকারম্যান ৬১) (তাসকিন ৪/২৫, সাকিব ১/৩২)