তারা এসেছিলেন ফুটবলের সুধা উপভোগ করতে। ফিরলেন লাশ হয়ে। ইন্দোনেশিয়ার লিগা ওয়ানে ঘটে যাওয়া হৃদয়বিদারক ঘটনায় শোকে স্তব্ধ ফুটবল বিশ্ব। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর কাছে ফুটবলে এটি একটি কালো রাত।





ইন্দোনেশিয়ার কানজুরুজান স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে আরেমা এফসি ও পারসেবায়া সুরায়া ক্লাব মুখোমুখি হয়। ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতে পারসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময় পর পারসেবায়ার কাছে হারায় আরেমার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে ঢুকে পড়ে।





পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোঁড়ে। তাতে , ছুটোছুটি হুড়োহুড়ি বেঁধে যায়। পূর্ব জাভার মালাং অঞ্চলের ম্যাচ শেষের দাঙ্গায় শ্বাসরুদ্ধ আর পদদলিত হয়ে মৃত্যৃ হয় অন্তত ১৭৪ জনের। জাভার পুর্বাঞ্চলের পুলিশ প্রধান নিকো আফিন্তা বলেন, আরেমার অন্তত ৩ হাজার সমর্থক ম্যাচের পর মাঠে ঢুকে পড়ে। দর্শকের উপস্থিতি ছিল প্রায় ৪০ হাজার। সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকলে এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ছোঁড়ে বলে জানান আফিন্তা।





শুরুর দিকে ১৩০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গিয়েছিল, কিন্তু পরে অফিসিয়ালরা নিশ্চিত করেন অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর মিছিল আরও লম্বা হওয়ার কথা।





এই ট্র্যাজেডি খতিয়ে দেখার জন্য ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএসআই) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বৈশ্বিক ফুটবলের নিয়ন্তা সংস্থা ফিফার সভাপতি ইনফান্তিনো সহমর্মিতা ও সমবেদনা জানিয়েছেন। “ইন্দোনেশিয়ায় যে ট্র্যাজিক ঘটনা ঘটেছে, তাতে ফুটবল বিশ্ব শোকে স্তব্ধ। ফুটবলের সঙ্গে জড়িত সবার কাছে এটি একটি কালো রাত এবং এই বিয়োগাত্মক ঘটনা ব্যাখ্যার অতীত।”





“যারা এই দুর্ঘটনার শিকার, এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা জানাই।”
দুর্ঘটনার প্রাণ হারানো ও আহতদের জন্য ইন্দোনেশিয়া, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি), ইন্দোনেশিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এবং দেশটির লিগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই কঠিন সময়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ইনফান্তিনো।
অপ্রত্যাশিত এই ঘটনার পর লিগা ওয়ানের খেলা এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্দোনেশিয়া। চলতি মৌসুমের শেষ পর্যন্ত আরেমা কোনো হোম ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে না বলেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তারা।