বাংলাদেশ ক্রিকেটকে চরম অ’প’মানিত করলো ভারতীয় পত্রিকা!

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এশিয়া কাপ খেলতে এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থা করছে। এদিকে বেশকিছু মাঠে ও মাঠের বাইরের নানা আলোচনায় বাংলাদেশ তো বটেই দেশের বাইরের সংবাদমাধ্যমেও হটকেক ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। এরই মাঝে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। অন্যদিকে হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে টি-টোয়েন্টি থেকে সরিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট বোর্ড। এমনকি এশিয়া কাপে দলের সাথেও নেই এই দক্ষিণ আফ্রিকান।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

বাংলাদেশ দলের এশিয়া কাপে হেড কোচ কে তাও বোর্ড থেকে বলা হয়নি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই সব নিয়ে কলকাতার জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার একটি রিপোর্ট করেছে। যাতে তারা লিখেছে বাংলাদেশ দলের কে কোচ, কে অধিনায়ক ব্যাপার না। সবকিছুই বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের হাতে!

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

শিরোনামটা এমন – Bangladesh Cricket: কে অধিনায়ক, কে কোচ দেখার প্রয়োজন নেই, বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘হাসান রাজা’

আনন্দবাজারের রিপোর্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো…

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

তিনি চাইলে খেলতে না চাওয়া ক্রিকেটারকে খেলিয়ে দিতে পারেন। তিনি চাইলে দেশের অধিনায়ক পাল্টে যেতে পারে। তিনি চাইলে এশিয়া কাপের মতো প্রতিযোগিতায় কোচ ছাড়া যেতে পারে দল। বাংলাদেশ ক্রিকেটে কান পাতলে শোনা যায়, সবই তাঁর ইচ্ছা। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। বোর্ড প্রেসিডেন্টের বিশ্বাস, শাকিব থাকলে দলে কোনও কোচের প্রয়োজন নেই। হাসান বলেন, “একটা জিনিস মনে রাখা দরকার। শাকিব অধিনায়ক হলে কে কোচ হল বা না হল সেটা নিয়ে ভাবার প্রয়োজন নেই। ও সেরা একাদশ বেছে নেবে। সকলের জানা উচিত, দলের প্রথম একাদশ শাকিবই বেছে নেয়। অবশ্যই ও কোচের পরামর্শ নেয়। কিন্তু কোচও সেই একাদশই মেনে নেয়, যেটা অধিনায়ক চায়। আমাদের দলে কোচ নেই, কিন্তু খালেদ মাহমুদ (টিম ডিরেক্টর) এবং জালাল ইউনিস (বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশন চেয়ারম্যান) আছে। আমি আছি। আর কাকে প্রয়োজন?”

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

এখন শাকিবের উপর অগাধ বিশ্বাস দেখাচ্ছেন হাসান। কিন্তু এই বছর মার্চ মাসেই ছিল উল্টো সুর। সেই সময় দেশের হয়ে খেলতে চাইছিলেন না শাকিব। অথচ আইপিএলের নিলামে নিজের নাম দিয়েছিলেন। তাতেই রেগে যান হাসান। শাকিবের দায়বদ্ধতা নিয়ে সেই সময় প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “শাকিবের যদি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভাল না হয়, তা হলে আইপিএলে নাম নথিভুক্ত কেন করাল, তা নিয়ে ভাবা উচিত। যদি আইপিএলে দল পেত, তা হলে একই কথা বলত? শাকিব যদি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে না চায় তা হলে আমাদের কিছু করার নেই।”

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

হাসান আরও বলেন, “শাকিব বলে দিতে পারে না, এই ম্যাচ খেলব, ওই ম্যাচ খেলব না। আমরা যাদের ভালবাসি, তাদের প্রতি সব সময়ই নমনীয় থাকি। কিন্তু তাদেরও পেশাদার হতে হবে। না হলে আমাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেটা পছন্দ না-ও হতে পারে।”

পাঁচ মাসের মধ্যেই বদলে গিয়েছে শাকিবের প্রতি হাসানের দৃষ্টিভঙ্গি। এর মাঝে একাধিক বার শাকিব অমুক সিরিজ খেলবেন না, তমুক সিরিজের বাছাই করা ম্যাচ খেলবেন বলে সুর তুলেছেন। জুয়া সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছেন। বোর্ডের চাপে সরেও গিয়েছেন। তার পরেও শাকিবের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে দেশের নেতৃত্ব। ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ক্রিকেটারের উপরই হঠাৎ আস্থা বোর্ড প্রধানের।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

বাংলাদেশ ক্রিকেটের কর্তা হাসানের ইচ্ছাই যে কর্ম, ক্রিকেটাররাও সেটা জানেন। ২০১৬ সাল থেকে দল নির্বাচনে না কি হাসানের ‘সম্মতি’ প্রয়োজন হয়। বোর্ড প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা না করে প্রথম একাদশ বাছার জন্য সকলের সামনেই নাকি টিম ম্যানেজমেন্টের সমালোচনা করতে পারেন হাসান। বড় প্রতিযোগিতার দু’সপ্তাহ আগে দলের কোচিং বিভাগে পরিবর্তনও নাকি করে দিতে পারেন হাসান। শোনা যায়, তিনি চাইলে কোনও ক্রিকেটারকে বাধ্য করতে পারেন তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে অমুক সিরিজে খেলতে। হাসান না চাইলে কোনও ক্রিকেটার অবসরও নাকি নিতে পারেন না।

সিরিজ চলার মাঝেই দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিষোদ্গার করতে পারেন হাসান। দলের বৈঠকেও ঢুকে পড়তে পারেন তিনি। তাঁর নিজের বাড়িতে ক্রিকেটার, কোচদের ডেকে আলোচনা করতে পারেন। সে সব নিয়ে নিঃসঙ্কোচে মিডিয়ার সামনে কথাও বলতে পারেন। এটাই হাসান। তাঁর নির্দেশেই নাকি চলে বাংলাদেশ ক্রিকেট।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

২০১৩ সাল থেকে বোর্ডের মাথায় হাসান। ২০২১ সালে তৃতীয় বারের জন্য বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন তিনি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওমি লিগেরও সদস্য হাসান। এশিয়া কাপে তিনি আশ্বাস রেখেছেন শাকিবের উপর। সেই চাপ কতটা কাজ করছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের উপর?

সোমবার শাকিব বলেন, “আমাদের দল হোক, টি-টোয়েন্টি লিগের দল হোক বা অন্য কোনও ক্রিকেট বোর্ড হোক— চ্যালেঞ্জ সব জায়গাতেই আছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই চ্যালেঞ্জ কত বড় তা নির্ভর করে।” গা বাঁচিয়ে কথা বললেন শাকিব? তা তো বলতেই হবে। বোর্ড (পড়ুন হাসান) যে ভাবে দেশের অধিনায়কদের সঙ্গে ব্যবহার করছেন, তাতে সেটাই স্বাভাবিক।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

বাংলাদেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক মাশরাফে মোর্তাজা। ২০১৭ সালে টি-টোয়েন্টি দল থেকেই তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়। ২০২০ সালে সরিয়ে দেওয়া হয় এক দিনের দল থেকেও। আইসিসি শাকিবকে এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলে বাংলাদেশের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল মাহমুদুল্লাহর হাতে। গত মাসে তাঁর নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জুয়া সংস্থার সঙ্গে শাকিব যখন চুক্তি করেছিল, সেই সময় আবার অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে (পড়ুন হাসানের পছন্দের তালিকায়) ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। শাকিব তখন ব্যাকফুটে। এখন আবার তিনিই অধিনায়ক।

মোমিনুল হক ছিলেন টেস্ট অধিনায়ক। কিন্তু সেই চাপ তিনি নিতে পারছিলেন না। মাঠের ভিতরে রান পাচ্ছিলেন না। মাঠের বাইরে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকে চিন্তিত দেখাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগের দিন নেতৃত্ব ছেড়ে দেন মোমিনুল। এক মাত্র অধিনায়ক তামিম ইকবাল স্বস্তিতে রয়েছেন। এক দিনের ক্রিকেটে তাঁর নেতৃত্বে ভাল খেলছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ সুপার লিগে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা। লিগের ছ’টি সিরিজের মধ্যে পাঁচটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। নিয়মিত রানও পাচ্ছেন তামিম। কিন্তু তিনি জানেন, যে কোনও সময় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। মোর্তাজার থেকে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভাল খেলছে তাঁর দল। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১-২ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও সেটা সুপার লিগের অংশ নয় বলে সমালোচনা হয়নি।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

আগামী কয়েক মাসের পরিস্থিতি আলাদা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অন্তত ছ’টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই সময় খারাপ খেললে শুধু সমর্থকরা দুঃখ পাবেন তা-ই নয়, শাকিবের উপরও চাপ বাড়বে। এশিয়া কাপের দলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি যাচ্ছেন হাসানও। বাংলাদেশ ক্রিকেটের খবর পাওয়ার দিক থেকে কোনও চিন্তা থাকার কথা নয়। কারণ, প্রতিটি ম্যাচ নিয়েই সাংবাদিক বৈঠক করতে ভালবাসেন হাসান। গত বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো খারাপ ফল হলে বাংলাদেশ শিবিরের পরিস্থিতি কেমন হবে তা আন্দাজ করাই যায়। সেই সঙ্গে অধিনায়ক শাকিবের উপরেও বাড়বে চাপ। আর ক্রিকেটারদের তো প্রশ্ন করার কোনও অধিকারই নেই।

অভিজ্ঞ শাকিব চাইবেন ঠান্ডা মাথায় খেলতে। তিনি মাঠের বাইরে বোর্ড প্রধান, ডিরেক্টরের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করবেন। সেই সঙ্গে মাঠের মধ্যে দলের লক্ষ্য ঠিক রাখার দায়িত্বও শাকিবের। টালমাটাল পরিস্থিতি, এর মাঝেও ভাল ফল করতে চাইবেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

পারলে শাকিবের উপহার হবে বোর্ডের শান্ত পরিবেশ। কিছু দিনের নিশ্চিন্ত পরিস্থিতি। নইলে ‘হাসান রাজা’ কী পদক্ষেপ নেবেন তা আন্দাজ করা মুশকিল।