
রাজনৈতিক টালমাটাল অবস্থা এবং তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কায় হচ্ছে না এশিয়া কাপের এবারের আসর। গুঞ্জন ছিল, টুর্নামেন্টটি আয়োজন হতে পারে বাংলাদেশে। তবে শেষ পর্যন্ত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সিদ্ধান্ত নিল এবারের টুর্নামেন্ট বসবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে।





বুধবার (২৭ জুলাই) এশিয়া কাপ আয়োজনের ব্যাপারে এ সিদ্ধান্ত নেয় এসিসি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত হলেও এশিয়া কাপের স্বাগতিক হিসেবে স্বত্ব পাবে শ্রীলঙ্কাই। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে টুর্নামেন্ট চলবে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।





বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন বাংলাদেশে না হয়ে মরুর দেশ আরব আমিরাতে গড়াচ্ছে এশিয়া কাপের আসর। এ ব্যাপারে গেল সপ্তাহে বিসিসিআইয়ের কাউন্সিল সভার পরই আভাস দিয়ে রেখেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডপ্রধান সৌরভ গাঙ্গুলী। জানিয়েছিলেন, এশিয়া কাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। কারণ সেটাই একমাত্র জায়গা যেখানে বৃষ্টি হবে না।





আরেকটু খোলাসা করে বললে বছরের জুন-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সাধারণত বৃষ্টি-বাদলা লেগেই থাকে। সে ক্ষেত্রে এমন ঝক্কি পোহাতে হবে না আমিরাতে। এ ছাড়া আরব আমিরাতে এর আগেও সফলভাবে অনেক টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছে। সেখানকার অবকাঠামোগত এবং ভ্রমণ সুবিধার কথাও কারো না জানার কথা নয়। তবে মরুর দেশের গরম একটু ভোগাতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে আগস্টের শেষ দশক থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুর সময়ে সেখানকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ছাড়াতে পারে।





তবে এটা পরিষ্কার, বৃষ্টির কারণেই কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। অবশ্য বাংলাদেশে এশিয়া কাপ আয়োজন হলেও খুব একটা লাভবান হতো না বিসিবির। যেহেতু স্বাগতিক স্বত্ব থাকতো শ্রীলঙ্কারই। তবে হোম গ্রাউন্ড এবং দর্শকদের একটা বাড়তি সুবিধা তো থাকতই।





আরব আমিরাতে এশিয়া কাপের ঘোষণা দিয়ে এসিসির প্রেসিডেন্ট জয় শাহ বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছি। নতুন সিদ্ধান্তটা আমরা অনেক চিন্তাভাবনা করে নিয়েছি। এবারের আসর আয়োজিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে। তবে শ্রীলঙ্কার স্বাগতিক স্বত্ব ঠিকই বহাল থাকবে। এ আসরটা এশিয়ার দেশগুলোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর মাধ্যমে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হয়ে যাবে।’





এশিয়া কাপে পাঁচ টেস্টখেলুড়ে দল ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ছাড়াও বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা একটি সহযোগী সদস্যদল অংশ নেবে।
এশিয়া কাপের সবশেষ চার আসরের তিনটিতেই স্বাগতিক ছিল বাংলাদেশ। ২০১২ সালে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের দেশে বাংলাদেশকে ২ রানে হারিয়ে শিরোপার স্বাদ নেয় পাকিস্তান। ২০১৪ সালে পরের আসরে ফাইনালে খেলে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় লঙ্কানরা। ফাইনালে তারা জয় পায় ৫ উইকেটে। ২০১৬ সালের এশিয়া কাপেও বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছিল; কিন্তু দুর্ভাগ্য যে ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হারতে হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।