
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে আইসিসি আয়োজিত বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট, বিশ্বকাপ, ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের সংখ্যা বেড়ে গেছে। টানা ম্যাচ খেলতে গিয়ে ক্রিকেটাররাও হাঁপিয়ে উঠছেন, পড়ছেন ইনজুরিতে। তাই বিশ্রামের মাধ্যমে ফিট থাকার প্রয়োজন হচ্ছে।
ক্রিকেটারদের এমন সুবিধা দেয়ার কথা মাথায় রেখেই ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়ান্ট দলগুলো ‘রোটেশন পলিসির’ দিকেই ঝুঁকছে। মূলত, টানা খেলার ধকল থেকে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের দীর্ঘ সময়ের জন্য ফিট রাখাতে প্রয়োজন ও সুযোগ বুঝে নিয়ম করে বিশ্রামে পাঠানোর ব্যাপারটাই হলো ‘রোটেশন পলিসি’। সদ্য সমাপ্ত ভারত-সাউথ আফ্রিকা টি-২০ সিরিজে কোহলি-রোহিতদের বিশ্রাম দিয়েছে বিসিসিআই অন্যান্য বড় বড় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও বর্তমানে দেশে এবং দেশের বাইরে প্রচুর ম্যাচ খেলছে।
আশার কথা এই যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত ‘রোটেশন পলিসি’ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেই দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কারণ ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বিসিবি। শরিফুল ইসলামকে সেন্ট লুসিয়া টেস্টের জন্য হঠাৎই দলে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত স্পষ্টত সে দিকেই ইঙ্গিত করে। ধারণা করা হচ্ছে, মুস্তাফিজকে বিশ্রাম দিয়ে শরিফুলকেই দ্বিতীয় টেস্টে খেলানো হবে
বাংলাদেশ দলের ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও সেই ইঙ্গিতই দিয়েছেন। বুধবার ‘ক্রিকবাজ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “দ্বিতীয় টেস্টে শরিফুলের খেলার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল, যদিও আমরা এখনও দ্বিতীয় টেস্টের একাদশ চূড়ান্ত করতে পারিনি।
আমরা যদি মুস্তাফিজকে বিশ্রাম দিই এবং শরিফুলকে বেছে নিই, তবে আপনারা বলতে পারেন যে রোটেশন পলিসি বাস্তবায়নের দিকে এটা আমাদের প্রথম পদক্ষেপ।”
শুধুমাত্র মুস্তাফিজের ক্ষেত্রেই নয়, ভবিষ্যতে তিন ফরম্যাটেই টাইগারদের টানা খেলার ধকল থেকে বিশ্রাম দেয়ার কথা ভাবছে বিসিবি। এ প্রসঙ্গে সুজন জানান, “আমরা সবসময় রোটেশন পলিসি চালু করার কথা ভাবছি এবং এটি কেবল মুস্তাফিজের ক্ষেত্রেই নয়, আমরা তিন ফরম্যাটেই খেলে এমন ক্রিকেটারদের রোটেটিং করার কথা ভাবছি।
কারণ তাদের পক্ষে তিনটি ফরম্যাটেই খেলা কঠিন। অন্তত আমরা বলতে পারি যে এটি এক ধরণের শুরু, যদি শেষ পর্যন্ত শরিফুলকে দিয়ে এই নীতি চালু করা হয় এবং আপনারা আগামী দিনে আরো দেখতে পাবেন।”
“আমাদের কাছে অন্য কোনো বিকল্প নেই। কারণ আগামী দিনে আমাদের অনেক টেস্ট আছে এবং আমরা আমাদের ফাস্ট বোলারদের টানা ম্যাচ খেলাতে পারব না কারণ এতে ইনজুরির ঝুঁকি থাকবে”-তিনি আরো বলেন বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের সামনে ‘রোটেশন পলিসি’ চালুর দাবী জানিয়েছেন সাকিব
২০২১ সালে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন তামিম ইকবাল। এর পরপরই এই ‘রোটেশন পলিসি’ বেছে নেওয়ার তত্ত্বটি প্রথমবারের মতো বিসিবির কর্মকর্তাদের মাথায় আসে।
এরপর অবশ্য, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও জোর দিয়েছিলেন যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরে খেলোয়াড়দের চাপমুক্ত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এছাড়াও, টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানসহ দেশের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটাররাও এ ব্যাপারে অনেকবার প্রকাশ্যে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। প্রায় সবাই এই নীতি চালুর পক্ষেই কথা বলেছেন।