
ট্রাফিক জ্যাম। ঢাকার বাসিন্দাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যা। নানাভাবে চেষ্টা করেও পুরোপুরি পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হয়নি জ্যাম থেকে। এবার সেই জ্যামের মধ্যেই ক্রিকেট খেলে আলোচনায় ঢাকা কলেজের একদল তরুণ। যা নজর কেড়েছে ক্রিকইনফোসহ একাধিক আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মাধ্যমের।





মসজিদের শহর, কোটি প্রাণের শহর, ব্যস্ততার শহর মেগাসিটি ঢাকা। তবে সব ছাঁপিয়েও ঢাকা যে জ্যামের শহর। যে যন্ত্রণা থেকে নগরবাসীর মুক্তি মেলা ভার। কষ্ট যখন নিশ্চিত তখন কার কি-ই-বা করার থাকে। তাইতো বাধ্য হয়েই জ্যামের মধ্যে নিজেদের সময় কাটানোর উপায় নগরবাসী বের করেছে নিজেদের মতোই। কেউ বসে বই পড়েন তো কেউ এক ফাঁকে ঢুঁ মারেন ইন্টারনেটের জগতে। কানে হেডফোন গুঁজে কেউ আবার চোখ মুদে শুনতে থাকেন গান।





তবে রাজধানীর বুকে এবার দেখা মিললো ভিন্ন এক দৃশ্যের। যা শোরগোল ফেলেছে আন্তর্জাতিক ক্রীড়ামাধ্যমগুলোতে। ক্রিকেটাঙ্গনের পরিচিত কারো হাত ধরে নয়। বরং তা ঢাকা কলেজের কিছু শিক্ষার্থীর হাত ধরে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল জ্যামের তীব্রতা। যেন একবিন্দুতে স্থির সবই। তখনই ফাঁকা স্থানে ব্যাটবল হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন একদল তরুণ।





পৃথিবীর নানা দেশে ছদ্মবেশে অনেক তারকা রাস্তায় নেমে পড়েন ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে। রাস্তার মানুষ দাঁড়িয়ে এসব দেখে যখন বিনোদিত হতে থাকেন তখন ছদ্মবেশ ছেড়ে স্বরূপে মানুষকে চমকে দেন তারা। বাংলাদেশে এভাবে রাস্তায় নামতে দেখা যায় না কোন তারকাকে। তাই বলে রাস্তায় মানুষকে বিনোদন দেওয়ার মানুষ কম নেই আমাদের তল্লাটেও। তাই যেন আরেকবার দেখালেন ঢাকা কলেজের সেই শিক্ষার্থীরা।





সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে মুশফিকুর রহমানের করা ভিডিও পোস্ট করে ডিসি সারকাজম নামের একটি পেইজ। যা মুহূর্তেই হয়ে যায় ভাইরাল। বিষয়টি লুফে নেয় ক্রিকইনফোসহ একাধিক ক্রীড়ামাধ্যম।
নিজেদের পেইজে পোস্ট করার আগে তারা ক্যাপশনে লিখেছে, নিশ্চিতরূপেই ঢাকার মানুষ জানে জ্যামে আটকে থাকা সময় কিভাবে কাজে লাগাতে হয়।মুহূর্তেই পোস্টের নিচে কমেন্ট আর রিয়েক্টে যায় ভরে।
শুধু ক্রিকইনফোর পেইজে প্রথম ২২ ঘন্টায় ভিডিওটি দেখেছে ২৭ লাখ মানুষ। শেয়ার হয়েছে ১২ হাজারের বেশি। রিয়্যাক্ট এসেছে ৭৭ হাজার। পোস্টের নিচের মন্তব্যগুলো আরো চমকপ্রদ।
কেউ লিখেছেন, এই পিচ রাওয়ালপিন্ডির চাইতে ভালো। কেউ মজা করেই বলছেন, ঢাকার যা জ্যাম তাতে টেস্ট ম্যাচও চাইলে খেলা সম্ভব।
সব মিলেয়ে, ক্রিকেট আর জ্যাম বাংলাদেশিদের জীবনের সঙ্গে যে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তার আরো এক উদাহরণ এই ভিডিও এবং তার মন্তব্যগুলো। আপাতত এই জ্যাম থেকে হয়তো মিলবে না নিস্তারও। ততক্ষণে তবে চলুক এমন ক্রিকেট। ক্রিকেট পাগল জনতা জ্যামের বিরক্তিতে বিনোদিত হোক ক্রিকেটেই।