
সময়টা ছিল ২০১৪ সালে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সাকিব অস্ট্রেলিয়া,ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়দের পাওয়ার হিটিং এবিলিটির উৎস বোঝাতে বলেছিল,তারা(অস্ট্রেলিয়া,ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা বেড়ে উঠার সময় পুষ্টিকর খাবার যেমন:দুধ,ডিম,অরেঞ্জ জুস ব্রেকফাস্টে তাদের বাধ্যতামূলক ছিল।আর আমরা তখন তাকে রসিকতা করে অরেঞ্জ জুস ডাকতে শুরু করলাম।এরপর সাকিব আক্ষেপ





করে বললো,”এদেশের মানুষ কখনো আমাকে বুঝলো না”।এতো বছর পর,সাকিবকে আদৌ আমরা বুঝতে পেরেছি?
পরশু রাতে সাকিবের সাংবাদিক সম্মেলনে ফিরি। ঐইদিন সাকিবের কথার মূল সারাংশ ছিল এমন,বেশ কয়েকদিন যাবত সাকিব খেলেটাকে ইনজয় করতে পারছে না।কি কারণে?ফিজিক্যালি এবং মেন্টালি সে আনফিট।এটা হতেই পারে।খুব স্বাভাবিক একটা





বিষয়।কেননা,২০২০ এর আগে প্রায়ই সাকিব টানা সব ফরম্যাটে ক্রিকেট খেলতো ইঞ্জুরি বাদে।ব্যতিক্রম ছিল ১৭ তে সাউথ আফ্রিকা সিরিজে ছুটি বাদে এইরকম টানা সিরিজ খেলার ধকল,সাথে বয়সটাও সময়টার সাথে পাল্লা দিয়ে দিয়ে বাড়ছে।এইরকম সিচুয়েশনে ব্রেক দিয়ে দিয়ে খেলেটা স্বাভাবিকই বটে।বিপত্তিটা বাঁধে মূলত সাকিব সাউথ আফ্রিকা সিরিজে খেলার কথা বলে দল ঘোষণা পর





সাকিব সাকিবের সমস্যার কথা বলা।এই ব্যাপারে সাকিবের ম্যাসেজ স্পষ্ট,আমি দলের বোঝা হতে চাই না।আমি বাংলাদেশের সাথে বেইমানি করতে পারি না আনফিট থেকে।সাথে এটা বলেছিল, আমাদের টেস্ট দলটা যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ন দল,আমাকে ছাড়া নিউজিল্যান্ডে জিতে এসেছে। এখন এইভাবে দলে ঢ়ুকে দলের ব্যালেন্স নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।কত চমৎকার চিন্তা-ভাবনা।





ইচ্ছা করলেই তো সিনিয়র কোটায় খেলতে পারতেন।কিন্তু তা না করে দলের কথা চিন্তা করে নিজ থেকে সরে দাঁড়ালেন। এইরকম একটা পজিটিভ ব্যাপারের আমরা গন্ডিই চেইঞ্জ করে দিলাম। এটা মূলত হয়েছে,গতকাল নাজমুল হাসান পাপনের সাংবাদিক সম্মেলনের পর।অনেকই গতকালের এই সম্মেলনের প্রশংসা করেতেছে,প্রশংসা করতেছে পাপনের। আমি ব্যক্তিগতভাবে প্রশংসা





করার কোনো কারনই খুঁজে পাচ্ছি না।উল্টো সাকিব ইশুতে ব্যাপারটাকে তিনি অনেক বেশি ঘোলাটে করে ফেলছে।পাপন সাহেব উল্টো ব্যাক্তিগত আক্রোশ থেকে সাকিবকে প্রশ্ন ছুড়ে
মারলেন,আইপিএল খেললেও কী সাকিব একই সমস্যার কথা বলতেন বা মাসে মাসে টাকা নিচ্ছে তই ঐরা খেলবে না কেন?আরে এই বয়সে কেউ কি টাকার জন্য খেলে?এইসব বাচ্ছাসুলভ
কথাবার্তা বলে পাপন সাহেব সমস্যার সমাধানের কোনো কথাই বললেন না।সমস্যা সমাধান করবেন কিভাবে?উনি তো সমস্যাটাই ধরতে পারছেন না।এই যে আমাদের সেরা পেস বোলার ফিজ
যে টেস্ট খেলতেছে না কিংবা রিয়াদ যে খেলতেছে না কোনো আলোচনা আছে?উত্তর অবশ্যই না।কিন্তু যখন সাকিব কোনো একটা সিরিজ খেলেতে চাই না তখন কেন এত হৈ-চৈ শুরু হয়?এই তো
কয়েকমাস আগে যে বেন স্টোকস স্বেচ্চায় অবসর নিলো,ইংল্যান্ড দল কিংবা তাদের ম্যানেজমেন্টকে হাউকাউ করতে দেখেছেন বা ম্যাক্সওয়েলের অস্ট্রেলিয়াকে?তাহলে সাকিবের বেলায় এত
হাউকাউ হয় কেন?এর একটাই কারন, এত বছর পর সাকিবের রিপ্লেসমেন্ট তৈরি না করা।সাকিবের রিপ্লেসমেন্ট তো দূরে থাক,একটা পঞ্চাশ পার্সেন্ট সাকিব তৈরি করতে পারে নাই বিসিবি।বহু বছ





ধরে সাকিবের মতো কোনো টপ লেভেলের পারফর্মার নাই বাংলাদেশ।(রিসেন্টলি লিটন বাদে)প্রায় ১৪ বছর ধরে যে বাংলাদেশ দল সাকিব বাদে যে স্রেফ জিম্বাবুয়ে টাইপ দল তা এক্সপোজ হয়ে
যাবে।যদিও অলরেডি বাংলাদেশ দল এক্সপোজড।আমরা নিয়মিত করে এখনো ঘরের মাঠে আফগানিস্তান সাথে হারি।বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের সাথে হারি।সাকিব কল্যাণে কোনো রকম বিশ্বকাপ
বাছাই টপকাই। আর বিসিবির ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামোর কথা তো না হয় বললাম।মিডিয়ার কথা চলা এই বোর্ড থেকে কিবা আশা করা যাই?আপাদমস্তক কান্ডজ্ঞানহীন এই বোর্ডের সাত জনমের
ভাগ্য যে,সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার এই দেশে জন্মাইছে।নাহয় সাকিবের নাম বেঁচে বেঁচে বাংলার ক্রিকেট উন্নতির ঢ়েঁকুর তোলা বন্ধ হয়ে যেত!সবকিছু বাদ দেন,অন্তত টপ লেভেলের
ক্রিকেটার সাকিবকে যদি বিসিবি বুজতে পারতো, তাহলে এইদেশের ক্রিকেট আরো অনেক দূর এগিয়ে যেত।