
‘আমার এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মত অবস্থা নেই। আমি শারীরিক ও মানসসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত।’ গত রোববার রাতে দুবাই যাওয়ার আগে বিমান বন্দরে অনেক এটাই ছিল সাকিবের মূল কথা। তা শুনেই তাকে বিমান বন্দরে ফোন দিয়েছিলেন বিসিবি ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। তিনি তাকে দুইদিন ভাবার কথা বলেছিলেন। আজ রাতেই সেই দুইদিন শেষ হয়ে যাবে।





এদিকে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে কোন জবাব আসেনি সাকিবের পক্ষ থেকে। এদিকে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের কথা শুনে মনে হচ্ছে তারা সাকিকে ছাড়াই টিম কম্বিনেশন সাজানো এবং গেম প্ল্যান তৈরি করে নিচ্ছেন।
সুজন জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সাকিবকে ছাড়াই টিম করছি এখন। তারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কিন্তু তারা না খেললে যে দেশের ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাবে তা না। জোর করে তো কাউকে খেলানো যাবে না। তাদের জায়গায় অন্য যারা সুযোগ পাবে তাদের জন্য বড় সুযোগ হবে।’





সুজনের কথা, ‘আমরা তো প্ল্যান, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ কত কিছু রাখি। সাকিব থাকলে এক রকম, না থাকলে আরে করকম।’ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সাকিব ও তামিম ছাড়া টেস্ট জয়ের উদাহরণ টেনে টিম বাংলাদেশের ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন যোগ করেন, ‘তামিম-সাকিব কেউ ছিল না, তারপরও বাংলাদেশ খেলেছে। আমরা নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতেছি।’





সাকিব না থাকলে প্ল্যান পরিবর্তন করতে হবে। এ কথা জানিয়ে টিম ডিরেক্টরের ঝাঁঝালো উচ্চারণ, এমন না যে সাকিব না থাকলে প্ল্যান হবে না। হ্যাঁ হবে। তবে অবশ্যই প্ল্যান চেঞ্জ হবে।’
সাকিব বরাবরই, ‘টু ইন ওয়ান।’ সে তথ্য জানিয়ে সুজন বলেন, ‘সে থাকলে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান বা বোলার নিয়ে খেলতে পারি। তো এখন সেটা হচ্ছে না। সেই সুবিধাটা পাচ্ছি না। তারপরও বাংলাদেশ ক্রিকেটে যে নেই তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো সেরা দলটা নিয়ে খেলতে।’





সুজন বোঝানোর চেষ্টা করেন, দিন শেষে দেশ সবার আগে এবং ওপরে। জাতীয় দলের হয়ে খেলাটাই তার চোখে অনেক অগ্রগণ্য।
সুজন বলেন, ‘তারপরও যদি কেউ জাতীয় দল থেকে সাময়িকভাবে ব্রেকে যেতে চায়, সেটা প্রসেস মেনে যাওয়া উচিৎ। কিন্তু ওদের কি জোর করা যাবে? তারা যদি ফিল করে খেলার জন্য আগ্রহী না, তো তারা নিজেদের ইচ্ছেটা চুজ করতে পারে। কিন্তু একটা প্রসেসের মধ্যে তো যেতে হবে।’
টিম ডিরেক্টের এর কথায় আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে। সাকিব-তামিম একটা সিরিজ না খেললে সে জায়গায় নতুন কাউকে সুযোগ দেয়া হয়। আবার তারা যখন ফেরে, তখন ওই ছেলেটার কী হবে?





সুজন খুব জোরের সাথে বলেন, ‘এখানে সাকিব না খেললেও কোন সমস্যা না, আই ডোন্ট কেয়ার। আমি মনে করি বিসিবিও কনসার্ন না, আমরা চাই যে সাকিব খেলুক। কিন্তু ওর যদি মনে না চায় যে কোন এক ফরম্যাট খেলবো না তো সে বলুক!’
সাকিব, তামিমরা না খেললে তো জাতীয় দলের শক্তি অনেক কমে যায়। তাই তাদের মত শীর্ষ তারকার মত প্রধান চালিকাশক্তিদের বাইরে রেখে কী দল সাজানোর চিন্তা সম্ভব?
এ প্রশ্নের জবাবে জাতীয় দলের পরিচালকের কন্ঠে অনেক বেশি ক্ষোভ ঝরলো, ‘একটা সময় আমিও ভয় পেতাম যে এই ছেলেগুলো (সাকিব-তামিম ও সিনিয়ররা) না থাকলে বাংলাদেশ দল কোথায় যাবে? কিন্তু এখন আমি আর ভয় পাই না।’





সাকিব-তামিমকে ছাড়াই নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ সেটাও উল্লেখ করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘তামিম-সাকিব কেউ ছিল না, নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতেছি। তারপরও বাংলাদেশ খেলেছে। এমন না যে সে না থাকলে প্ল্যান হবে না, অবশ্যই প্ল্যান চেঞ্জ হবে। সে থাকলে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান বা বোলার নিয়ে খেলতে পারি। তো এখন সেটা হচ্ছে না। সেই সুবিধাটা পাচ্ছি না। তারপরও বাংলাদেশ ক্রিকেটে যে নেই তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে। আমরা চেষ্টা করবো সেরা দলটা নিয়ে খেলতে।’