
বাংলাদেশের জয় তখন কেবল সময়ের ব্যাপার। টিভি পর্দায় দেখা গেল, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সে বসে আছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। হৃষ্টচিত্তে কথা বলছেন। মুখে হাসি খেলা করছে।





প্রায় ৩০ ওভার আগে এই মুখই কেমন ছিল, তা আন্দাজ করে নেওয়া যায়। নিশ্চিত হার বুঝে সমর্থকদের মতোই মুখে আঁধার ভর করার কথা। কিন্তু আফিফ হোসেন-মেহেদী হাসান মিরাজের স্মরণীয় জুটিতে আঁধার কেটে দেখা মিলল আলোর। ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ৭ বল হাতে রেখে ২১৫ রান তাড়া করে জয়ের কারিগর দুই তরুণ। ম্যাচ শেষে তাঁদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই করলেন বিসিবি সভাপতি, ‘দুজন যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলে গেল,





কোনো ঝুঁকি না নিয়ে। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। ওদের দেখে মনে হয়নি নার্ভাস। যেসব শট খেলছিল, সত্যিই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তবে যত সময় যাচ্ছিল, বিশ্বাসটা জোরালো হচ্ছিল, ওরা থাকলে জেতা যাবে। অসাধারণ ইনিংস খেলেছে আফিফ-মেহেদী।’ অসাধারণই বটে। ১৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয় তুলে নেওয়ার আগে আফিফের অবদান ৯৩, মিরাজের ৮১। ২৫ বছরের নিচে এই দুই তরুণের হাল ধরা দেখে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশার কথা শোনালেন নাজমুল হাসান





, ‘যে পরিস্থিতিতে আমরা পড়েছিলাম, এটাকে সামাল দেওয়ার মতো সাহস ও জয়ের দৃঢ়তা আমাদের দুই ইয়াং স্টার যেভাবে দেখিয়েছে, তা অসাধারণ। তাই আমি মনে করি, আমাদের নতুন প্রজন্মের যেসব খেলোয়াড় আছে, তাদের জন্য ভালো খবর। আমাদের ভবিষ্যৎ অতটা খারাপ না, যতটা ভেবেছিলাম।’ বাংলাদেশের ইনিংসে শুরুতে ব্যাটসম্যানদের ফিরে যাওয়ার মিছিল দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন বিসিবি সভাপতি। তখন জয় নিয়ে তেমন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না তিনি,





‘সত্যিকার অর্থে আত্মবিশ্বাসী ছিলাম না। আমরা সবাই বলছিলাম, যদি ৫০ ওভার খেলতে পারি, তাহলে জিতব। এরপর আমি বললাম, এ দুজন (আফিফ-মিরাজ) যদি খেলে যেতে পারে, তাহলে জেতার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু মনে হচ্ছিল, এটাও প্রায় অসম্ভব। কারণ, যেভাবে আমাদের প্রথম ৬টা উইকেট গেল, মনে হচ্ছিল, ওদের বল খেলা সম্ভবই না। খেলার অযোগ্য।’ তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
সিরিজে বাকি দুটি ম্যাচ নিয়ে পরামর্শও দিলেন বিসিবি সভাপতি, ‘আমি বারবার একটা কথা বলেছি, যত দিক দিয়ে বিচার করেন না কেন, আমাদের দলটা বেশি ভালো। আমাদের খেলোয়াড়েরা র্যাঙ্কিং-অভিজ্ঞতা—সব দিক দিয়ে এগিয়ে। আমদের দেশে মাটিতে আমরা যদি ওদের সঙ্গে সাহস করে না খেলি, বেশি চিন্তা করি, তাহলেই ঝামেলা। তাই খেলোয়াড়েরা যদি ঠান্ডা মাথায় খেলে, তাহলে সহজেই আমরা সিরিজ জিততে পারি।’