আবার যেন ২০০৭ সালে ফিরে গেলো বাংলাদেশ

bd

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতেই দেখা মিলল সাকিব আল হাসানের। বাংলাদেশ দলের বেশীরভাগ সদস্য তখন গা গরমে ব্যস্ত কিন্তু তিনি নেটে ব্যাটিং করছেন। প্রেস বক্স থেকে ক্রিকেটারদের অনুশীলনেরস্থলে যেতে সময় লাগে অন্তত ৫ থেকে ৭ মিনিট।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

সেখানে যেতে যেতে পুরো দৃশ্য আরও স্পষ্ট হল। ব্যাটিংয়ে থাকা এই অলরাউন্ডারের সঙ্গে তো বোলাররা তো ছিলেনই, ছিলেন আরেকজনও। তিনি আর কেউ নন, জেমি সিডন্স। বোলিং প্রান্ত থেকে দাঁড়িয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন শিষ্যের ব্যাটিং। এই দৃশ্য যেন ফিরিয়ে নিয়ে গেল এক যুগ আগে। পায়ে হেঁটে মাঠের উত্তর পাশের নেটে যেতে যেতে শেষ সাকিবের অনুশীলন। সময় না নিয়ে চলে গেলেন ডাগআউটেও। তবে এই সময়টুকুর মাঝে সাকিবকে পরখ করে দেখা শেষ সিডন্সের।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

এবার পালা বাকিদের। দুই পাশের নেটে চলে এলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। এই দুই ওপেনারদের ক্ষেত্রেও একই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ব্যাটিং দেখতে থাকলেন সিডন্স। প্রায় ২৫ মিনিটের পর অনুশীলন শেষে এলেন ইয়াসির আলি রাব্বি ও মুশফিকুর রহিম। তাদের ক্ষেত্রেও একই কাজটাই করলেন এই অস্ট্রেলিয়ান। তামিম, সাকিব ও মুশফিক শুধু উত্তর পাশের নেটে ব্যাটিং করলেও লিটন অনুশীলন শেষে চলে যান প্রেস বক্সের নীচের দিকের নেটে।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

সেখানে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। নাফিস ইকবালকে নিয়ে লিটন একপাশের নেটে ব্যাটিংটা আরও একটু ঝালাই করে নিলেন। তবে পাশের নেটেই ছিল উল্টো চিত্র। ব্যাটে-বলে যেন মন মতো টাইমিং হচ্ছিল না মাহমুদউল্লাহর। বারবার বিরক্তও হচ্ছিলেন তিনি। মিনিট দশেক পর টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের নেটে উপস্থিত রাসেল ডমিঙ্গো। প্রধান কোচকে পেয়েই মাহমুদউল্লাহ বলে বসলেন, ‘কোচ ইজ মাই ফুটওয়ার্ক ওকে? (আমার ফুটওয়ার্ক কি ঠিক আছে কোচ?)’

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

উত্তরে ডমিঙ্গো বললেন, ‘মুভ ইয়োর ফ্রন্ট লেগ বিট ফাস্টার’ অর্থাৎ তোমার সামনে পা একটু দ্রত চালাও। প্রধান কোচের এই উপদেশ শুনে মাহমুদউল্লাহ সেটাই করার চেষ্টা করলেন, ৪-৫ বল পর মন মত টাইমিং হওয়ায় কোচের কাছে গিয়ে বললেন, ‘লিটিল বেটার নাও (এখন আগের তুলনায় একটু ভালো)’। এই পাশে যখন মাহমুদউল্লাহ ও লিটন অনুশীলন ব্যস্ত তখন বেলা প্রায় ১১টা। উত্তর পাশের নেটে তখনই ব্যাটিং করছিলেন তামিম।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

অনুশীলন শেষে সিডন্সের কাছে গিয়ে ভুলগুলো বুঝে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। হাতের ইশারায় নবনিযুক্ত এই ব্যাটিং কোচও তাকে দেখাচ্ছিলেন যে তার সামনের পা বেশি এগিয়ে যাচ্ছে। সেটা একটু কম আগাতে, তাহলে অফ সাইডের শটসগুলোতে সহায়তা পাওয়া যাবে। এদিন শুধু তামিম নন, সিডন্সের শরণাপন্ন হয়েছেন তার পুরনো আরও ৩ শিষ্যও। বোলিংয়ে এসে সাকিব আজ শুরু করেছেন মিডিয়াম পেস, সেটাও দাঁড়িয়ে দেখেছেন সিডন্স।

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

এরপর ধীরে ধীরে স্পিন বোলিংয়ে ফিরে যান তিনি। অনুশীলন শেষে ডমিঙ্গো ও সিডন্সের সঙ্গে একবার একসঙ্গে আবার একবার আলাদা করে অনেকক্ষণ কথাও বলেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। সিডন্সের সঙ্গে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে সাকিবকেও তার ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। দূর থেকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল পুল শটের ক্ষেত্রে দুই হাতের মাঝে যে গ্যাপটা থাকে সেটা কম রাখতে বলছেন এই অজি কোচ। নিজেও শ্যাডো করে তা বারবার সাকিবকে দেখাচ্ছেন।

সাকিব সেটা দেখে আবার নিজে শ্যাডো করে তাকে দেখাচ্ছেন। সিডন্সের ক্লাসে এরপর আসেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। চেয়ারে বসে মুশফিক প্রায় মিনিট পাঁচেক আলাপ করেন এই কোচের সঙ্গে। এরপর উত্তর পাশের নেটে ব্যাটিং শেষে মাহমুদউল্লাহ সিডন্সের সঙ্গে কথা বলেন। এবার তাদের আলাপচারিতায় এক পর্যায়ে যোগ দেন ডমিঙ্গোও। এ ছাড়া সাকিবের সঙ্গে বসে অনেকক্ষণ আলাপ করেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। দূর থেকে দেখে অঙ্গভঙ্গি দেখে ধারণা করা যাচ্ছিল হয়তো ব্যাটিং নিয়েই কথা বলছেন তারা।

তামিম-সাকিবরা যখন জাতীয় দলে নতুন সে সময় বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ছিলেন সিডন্স। ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত তার অধীনেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় নাম হয়ে ওঠেন এই চারজন। প্রায় এক যুগ পর নতুন ভূমিকায় ফেরা সিডন্সের যেন পুরনো শিষ্যদের নিয়েই একটু বেশি ব্যস্ত ছিলেন। এই মুহূর্তে এই ৪জন দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হলেও অনেক তরুণরা আছেন দলে। তাই তো ওয়ানডে দলপতি তামিম ইকবাল মনে করছেন,

বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক বড় প্রভাব রাখতে পারেন সিডন্স। এমনকি তারা যেভাবে উপকৃত হয়েছিলেন, এখনকার সময়ে আফিফ-ইয়াসিরদের ক্ষেত্রও এমনটা হবে বলে আশা করছেন তিনি। তামিম বলেন, ‘জেমি বাংলাদেশে অনেক বড় প্রভাব রাখতে পারে। তার যে অভিজ্ঞতা আছে বা তার সাথে কাজ করার যে অভিজ্ঞতা আমাদের আছে… আমরা সিরিজের মধ্যে আছি তাই এই সময়টা ওর জন্য একটু কঠিন। কমবেশি যতটুক পারছে চেষ্টা করছে।’ ‘যদিও আমি নিশ্চিত তরুণরা ওর কাছ থেকে অনেক উপকৃত হবে। আমি সবসময় একটা কথা বলি- একটা কোচ ১০টা অপশন দিবে, আপনার বুঝতে হবে কোন ২-৩টি আপনার কাজে লাগবে। সবকিছু শুনলে কাজ না-ও হতে পারে। নিজের দায়িত্বে বুঝতে হবে কোনটা কাজে লাগবে, আপনি সিনিয়র জুনিয়র যে-ই হন’ আরও যোগ করেন তিনি।

ডমিঙ্গো ও সিডন্সের একসঙ্গে কাজ করা নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক আলোচনা হলেও মাঠের চিত্র ছিল ভিন্ন। অনুশীলনকালীন দুজন বেশ কয়েকবার আড্ডায় মেতেছেন। একসঙ্গে চেষ্টা করেছেন পুরো দলকে কিভাবে সহায়তা করা যায়। এই প্রসঙ্গে তামিম বলেন ‘রাসেল ও জেমি… আমরা একটা দল। রাসেল হেড কোচ হয়ে সেই দলের অংশ। জেমি ব্যাটিং কোচ হয়ে এই দলের অংশ। আমার মনে হয় না এটা আমরা আলাদাভাবে চিন্তা করছি বা দেখার দরকার আছে। যারা এই সেটআপে আছে, তারা মিলেই বাংলাদেশ দল।’

jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn
jwppfOn

‘ম্যানেজমেন্ট বলুন, খেলোয়াড় বলুন, আমরা সবাই এক। এভাবেই আমরা এগোতে চেষ্টা করব। দূরত্ব থাকলে ভালো কিছু হবে না। খেলোয়াড়- স্টাফ আমরা সবাই জানি আমরা একটি দল। ভালো খেলি খারাপ খেলি, একসাথেই থাকব আমরা’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াডে কোন লেগ স্পিনার নেই। তবে চট্টগ্রামের নেটে ঠিকই দেখা মিলেছে দুই লেগির। আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও রিশাদ হোসেন দীর্ঘক্ষণ নেটে বোলিং করেছেন। তাদের দেখে স্পষ্ট ধারণাই পাওয়া যাচ্ছিল যে রশিদ খান-মুজিব উর রহমানদের সামাল দিতেই তাদের দলের সঙ্গে রাখা হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান

You May Also Like