
যেকোন ফরম্যাটে ব্যাটিং অর্ডারের ৩ ও ৫ নম্বর পজিশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফরম্যাট টা যখন ওয়ানডে তখন তো কথাই নেই। ওপেনারদের সাফল্য-ব্যর্থতার ওপর ৩ নম্বরে ব্যাট করা ব্যাটারের ভূমিকা বদলায়। টপ অর্ডারের সাফল্য-ব্যর্থতায় বদলায় ৫ নম্বরে নামা ব্যাটারের।
এই দুই পজিশনে কম পরীক্ষা নিরিক্ষা চলেনি বাংলাদেশ দলে। শেষমেশ ৩ নম্বরে সাকিব আল হাসান থিতু হলেও ৫ নম্বর জায়গাটা নিয়ে এখনো দুশ্চিন্তামুক্ত নয় দল।





গেলবছরে ৩ নম্বরে ৩ বার করে ওয়ানডেতে ব্যাট করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। সাকুল্যে দুজনের ৬ ইনিংসে মিলিত রান ৭১! তবে পরের ৬ ইনিংসে ৩ এ ব্যাট করেন সাকিব আল হাসান, যেই পজিশনে ২০১৯ বিশ্বকাপে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ১৫, ০ ও ৪ রান করে আউট হলেও জিম্বাবুয়েতে খেলেন যথাক্রমে ১৯, ৯৬* ও ৩০ রানের ইনিংস। ৬ ইনিংসে ৩২.৮০ গড়ে ১৬৪ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল তাই বলছেন ৩ নম্বর জায়গা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ নন।





তামিম বলেন, ‘নাম্বার ৩ পজিশনের কথা যেটা বললেন, শেষ ৬ ওয়ানডেতে কিন্তু একজনই নাম্বার ৩ এ ব্যাটিং করেছেন। শ্রীলঙ্কার সাথে দেশে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অ্যাওয়েতে। নাম্বার ৩ নিয়ে আমি চিন্তিত না।’
তবে ৫ নম্বর জায়গা নিয়ে যে চিন্তা আছে তা আড়াল করেন নি তামিম। গেল বছরে ১২ ওয়ানডে মোট ৪ জন ব্যাট করেছেন ৫ নম্বরে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১ ম্যাচে ব্যাট করে ফিরেছেন শুন্য হাতে। ৩ ম্যাচ খেলে মোহাম্মদ মিঠুন করেছেন ৮২ রান, যার ৭৩ ই আসে এক ম্যাচে। ৪ টি করে ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর রহিম। ৫৬.৫০ গড়ে মুশফিকের রান যেখানে ১১৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সেখানে ১৭.৭৫ গড়ে ৭১।





এবার অবশ্য ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি ও মাহমুদুল হাসান জয়ের মধ্যে একজনকে এই পজিশনের জন্য ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তামিম বলেন, ‘হ্যা, নাম্বার ৫ নিয়ে একটা কনসার্ন অবশ্যই ছিল। এখানে এখনো আমরা ফিক্স করতে পারিনি। এখানে ইয়াসিরকে নেওয়া হয়েছে, জয়ও আছে। আমাদের অপশন আছে। আর আমার কাছে মনে হয় ৫ নম্বরে যদি কেউ ভালো করে সেটা আমাদের জন্য ভালো। কারণ এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পজিশন।’





‘মাঝে মধ্যে আপনাকে নেমেই হিট করতে হতে পারে। কখনো আবার শুরুতে উইকেট পড়ে গেলে ইনিংস ধরে রাখতে হতে পারে। এই জায়গা টা গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও চেষ্টা করছি। এই দলটা দেখলে বুঝতে পারবেন যে আমরা ঘরোয়া লিগে পারফর্ম করাদের সুযোগ দিচ্ছি।’ টেস্টে মাহমুদুল হাসান জয়কে ওপেনার বানিয়ে দেওয়া হলেও ওয়ানডেতে মিডল অর্ডারের ভাবনায় তিনি। তামিম বলছেন টপ ও মিডল সবখানেই খেলার সামর্থ্য আছে জয়ের। স্পিন ভালো খেলেন বলে ৫ নম্বরে বিবেচিত হবে জয় ও রাব্বির মধ্যে একজন।





টাইগারদের ওয়ানডে কাপ্তান বলেন, ‘যখন জয় টেস্টে ওপেন করেছিল আপনারা বলেছিলেন সে তো মিডল অর্ডার ব্যাটার, ওপেন করছে কেনো। এখন যখন টেস্টে ওপেন করে ফেলেছে তখন বলছেন সে তো ওপেনার, মিডল অর্ডারে কেনো! জয়কে আমি যতদূর দেখেছি সে ফিফটি ওভারের টুর্নামেন্টে মিডল অর্ডারে খেলেছে। ৩-৪ এ সে ব্যাট করেছে, সে টপ থ্রি তেও ব্যাট করার সক্ষমতা রাখে।’





‘যদি টিম ম্যানেজমেন্ট, আমরা মনে করি সে টপ থ্রিতে ব্যাট করবে সে সেটাও করতে পারবে, আবার যদি ৫ নম্বরের জন্য ভাবি সে সেটাও করতে পারবে। আপনি যদি দেখেন ওর ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময়েই ও ব্যাটিং করেছে ৩-৪ এর মধ্যে। টেস্টে ও ওপেন করে না, তবে শুরুটা ভালো করেছে। জয় স্পিনটা খুব ভালো খেলে। সেটা মাথায় রেখেই আমরা ওকে দলে নিয়েছি, তরুণদের মধ্যে সে খুব ভালো স্পিন খেলে। একই কথা রাব্বির জন্যও প্রযোজ্য। সে দারুণ করেছে। এই দুজনের মধ্যে যদি কেউ খেলে তবে সে ৫ নম্বরে খেলবে।’