আগেই জানা ছিল, ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) পরবর্তী চক্রে বেশ কিছু বৈশ্বিক ইভেন্টের স্বাগতিক হতে চায় বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেট ভক্তদের জন্য সুখবর, ২০২৪ সাল থেকে পরবর্তী ৮ বছরের মধ্যে অন্তত দুটি ইভেন্টে আয়োজক হতে পারে বিসিবি। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ক্ষেত্রে একাই আয়োজন করতে পারে সবকিছু।
আইসিসির প্রধান নির্বাহী কমিটির (সিইসি) সভা শেষ করে সম্প্রতি দেশে ফিরছেন বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী। এই সভাতে ২০২৪ থেকে ২০৩১ সালের বিশ্ব ইভেন্ট বণ্টন নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। এই আট বছর স্লটে আটটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট রেখেছে আইসিসি। সেখানেই জানা গেছে, আট ইভেন্টের ভেতর দুটির আয়োজক হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আর ২০২৮ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আইসিসি সদস্যদের সভা শেষে আজ সন্ধ্যায় ইভেন্টগুলোর স্বাগতিক দেশের নাম ঘোষণা করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সুসংবাদ নিয়েই দেশে ফিরবেন।
এবার বৈশ্বিক ইভেন্টগুলো বণ্টন করা হচ্ছে মনোনয়নের ভিত্তিতে। তিন ধাপে আয়োজক দেশের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ইভেন্ট আয়োজনে আগ্রহ দেখাতে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছিল। এ সময় ছেলেদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পেতে ১৭টি দেশ আগ্রহ দেখিয়েছিল।
প্রাথমিক প্রস্তাবনা পাওয়ার পর বিস্তারিত প্রস্তাবনা চাওয়া হয়। বিসিবি শক্তিশালী একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে জমা দেয়। ইভেন্ট পর্যালোচনা সভায় যেটা খুব প্রশংসিত হয়েছে বলে জানান একজন কর্মকর্তা।
আইসিসি প্রতিনিধি দল শিগগিরই সুযোগ-সুবিধা পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ আসতে পারে। ২০২৪ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ দিয়ে পরবর্তী আট বছরের স্লট কার্যকর হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে আয়োজন করবে ‘২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ।
এরপর ২০২৫ ও ২০২৯ সালে হবে দুটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বিসিবি এককভাবে এই দুই টুর্নামেন্টে স্বাগতিক হওয়ার আবেদন করে। সেক্ষেত্রে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হতে পারে ঢাকায়।
২০২৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০২৮ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান মিলে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাব দিলেও সেটা পাচ্ছে না। তবে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে একটি টি-২০ বিশ্বকাপ পাওয়া নিশ্চিত। সেটি ২০২৮ সালের বিশ্বকাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কোনো কারণে বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হলে ২০৩০ সালে স্বাগতিক করা হবে বাংলাদেশকে। ২০২৭ ও ২০৩১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ দেওয়া হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা-জিম্বাবুয়ে আর ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের মধ্যে যে কোনো দেশকে। পাকিস্তানও পেতে পারে একক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ।
বৈশ্বিক ইভেন্ট আয়োজনের সাংগঠনিক দক্ষতা আছে বিসিবির। সেই ১৯৯৮ সাল থেকে আইসিসি ইভেন্টের স্বাগতিক বাংলাদেশ। নকআউট বিশ্বকাপ আর ২০১৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের এককভাবে আয়োজনের পাশাপাশি ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক ছিল বিসিবি। এই বড় তিনটি টুর্নামেন্টই সফলভাবে সম্পন্ন করে সুনাম কুড়িয়েছে।
এক যুগ পর সেই টি-২০ টুর্নামেন্টের যৌথ আয়োজক হতে হচ্ছে বোর্ডকে। কারণ পরের টি-২০ বিশ্বকাপগুলো হবে ২০টি দল নিয়ে। এই মেগা ইভেন্ট করতে আটটি ভেন্যু ও আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ও বিমানবন্দর থাকতে হয়। সেটা না থাকায় শ্রীলঙ্কাকে সঙ্গে নেয় বিসিবি।
ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম, পূর্বাচলে প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, কক্সবাজার স্টেডিয়াম রাখা হলেও অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় আইসিসির চাওয়া পূরণে প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পাশাপাশি টি-২০ বিশ্বকাপ পাচ্ছে বাংলাদেশ।