২০১৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপে ব্যাপক ভরাডুবি হয় আর্জেন্টিনার। ওই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা বিদায় নেয় দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই। ফ্রান্সের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিয়েছিল তারা।
গ্রুপ পর্বেও তাদের পারফর্মেন্স ছিল বেশ হতাশাজনক। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল, কিন্তু বিদায়ের সূর বাঁজতে পারত গ্রুপ পর্বেই।
তবে ১৮ বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনাকে কোন অভিজ্ঞ কোচের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশন। কিন্তু আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে কোন নামকরা কোচ পায়নি আর্জেন্টিনা।
তখন বাধ্য হয়েই স্কালোনির উপর আর্জেন্টিনার দায়িত্ব দেয়া হয়। স্কালোনি তখনও ছিল অচেনা। তার নামও অনেকেই প্রথম শুনেছিল তখন। এমন একজন ব্যক্তির কাছে আর্জেন্টিনা দলের ভার দেয়া কি ঠিক হবে কিনা সেটা নিয়েই চলছিল সমালোচনা।
আর্জেন্টিনার সাবেক ফুটবল লিজেন্ড ডিয়েগো ম্যারাডোনা তো স্কালোনির সমালোচনাই করেছিলেন। খেলাই বুঝেনা বলেও অভিযোগ করেছিলেন। তোপ দেগেছিলেন বোর্ডের বিরুদ্ধেও।
স্কালোনি অবশ্য তার বিরুদ্ধে এতসব অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলেননি। তিনি হয়তো নিজের কাজেই প্রমান দিতে চেয়েছিলেন। ধীরে ধীরে দলটিকে গুছানো শুরু করলেন। বিভিন্ন লিগে পারফর্ম করা সেরা তারকাদের ডেকে দল সাজাতে লাগলেন।
২০১৯ কোপা আমেরিকায় তারা খেলেছিল সেমিফাইনাল। আর্জেন্টিনা বিদায় নিলেও আর্জেন্টিনার উন্নতির ছাপ পাওয়া গিয়েছিল সেখানে। যার চূড়ান্ত সফলতা ধরা দেয় এবারের কোপা আমেরিকায়। দীর্ঘ আড়াই যুগ পর আর্জেন্টিনা কোন শিরোপা জিতেছে তার অধিনেই।
ল্যাতিন আমেরিকার জায়ান্ট আর্জেন্টিনা বরাবরই ছন্দময় ফুটবল খেলে আসছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে সেখানেও নতুনত্ব এনেছেন স্কালোনি।
বর্তমান গতিশীল ফুটবলের বিপক্ষে স্লো ফুটবল কার্যকর হবে না বুঝতে পেরেছিলেন স্কালোনি। কিন্তু তাই বলে ল্যাতিনের ছন্দকে ভুলে যাননি তিনি। ছন্দের সঙ্গেই গতির মিশ্রন ঘটিয়েছেন। তাতেই আর্জেন্টিনা হয়ে উঠেছে দুর্দান্ত এক দল।
২০১৮ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনা আর এই আর্জেন্টিনার মধ্যে অনেক পার্থক্য। আজকের আর্জেন্টিনা বিশ্বের যেকোন দলকে হারাতে সক্ষম। অখ্যাত স্কালোনি নিজের ক্ষমতার প্রমান দিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে বিশ্বমঞ্চে আরও একবার শক্তিশালী দল হিসেবে দাড় করিয়ে। এই আর্জেন্টিনার কাছে ভক্তরা বিশ্বকাপের আশা করতেই পারে।