
ফুটবল নিয়ে মেতে আছে গোটা বিশ্ব। আর ফুটবলের মধ্যমণি লিওনেল মেসিকে নিয়েও চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কিন্তু খোদ মেসির মধ্যমণি কে? অবশ্যই তার জীবনসঙ্গী আন্তনেলা রোকুজ্জো।





নতুন খবর হচ্ছে, আন্তনেলা রোকুজ্জো অল্প বয়সেই ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসির প্রেমে পড়েন। লিওনেল মেসি ২০০৮ সালে গণমাধ্যমে আন্তনেলা রোকুজ্জোর সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা প্রথম প্রকাশ করেন। রোকুজ্জোর জন্ম আর্জেন্টিনার সান্তা ফে, রোজারিওতে ১৯৮৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়াারি। তার বাবা জোসে রোকুজ্জো একজন ব্যবসায়ী। মা প্যাট্রিসিয়া রোকুজ্জো একজন গৃহিণী।





আন্তনেলারা তিন বোন। কারলা এবং পলার সঙ্গেই বেড়ে ওঠেন তিনি। চাচাতো ভাই লুকাস স্ক্যাগলিয়ার ছোটবেলার বন্ধু মেসি। ভাইয়ের বন্ধু হিসাবে পাঁচ বছর বয়সেই তার মেসির সঙ্গে পরিচয় হয়। সময়টা ১৯৯৬ সাল। সে সময় মেসির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।





নিজ শহর ছেড়ে লিওনেল মেসি ১৩ বছর বয়সে স্পেনে চলে যান। কারণ তিনি বার্সোলনায় ফুটবল খেলার প্রস্তাব পেয়েছিলেন। হয়ে ওঠেন বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের একজন। আর রোকুজ্জো ইউনিভার্সিটি দেল রোজারিওতে যোগ দেন। তিনি ওডনটোলজি অধ্যয়ন করেন। দু’জন দু’জায়গায় থাকলেও তাদের মধ্যে প্রেম ছিল অক্ষুণ্ন। ২০০০ সালের শেষ দিকে রোকুজ্জো বার্সেলোনায় মেসির কাছে চলে আসেন। তারা একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। তাদের একটি রোমান্টিক সম্পর্ক শুরু হয়। ২০১০ সালের বিশ্বকাপের আগে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম লিওনেল মেসি এবং রোকুজ্জো জুটিকে ব্যাপকভাবে চিহ্নিত করে। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে তাদের প্রথম সন্তান থিয়াগোর জন্ম হয় ২০১২ সালের ২ নভেম্বর, দ্বিতীয় ছেলে মাতেও জন্ম ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। দুই ছেলেকে নিয়ে সুখী দাম্পত্য জীবন কাটান এই যুগল। ফুটবল কর্মসূচির বাইরে সময় পেলেই রোকুজ্জো আর দুই ছেলেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন মেসি। মেসির সমুদ্রতটে ঘুরে বেড়ানো প্রিয় বলে সন্তানদের নিয়ে তারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সমুদ্রতটে ঘুরে বেড়িয়েছেন।





ফুটবল জাদুকর মেসির সঙ্গে সংসার, সন্তানদের সময় দেওয়ার পাশাপাশি রোকুজ্জো মডেলিং পেশাটাকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। ২০১৬ সালের নভেম্বরে রোকুজ্জো ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন, তিনি আর্জেন্টিনার ফ্যাশন লেবেল রিকি সারকানির সঙ্গে একটি মডেলিং চুক্তি করেছেন।





তাদের দীর্ঘ প্রেমের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায় ২০১৭ সালের ৩০ জুন। লিওনেল মেসিকে বিয়ে করেন। জাঁকজমকপূর্ণ এ বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের নামিদামি খেলোয়াড়রা। বিয়ের পর তারা একাধিক জায়গায় হানিমুনে যান। সঙ্গে ছিলেন তাদের দুই সন্তান। তাদের তৃতীয় সন্তান সিরোর জন্ম ২০১৮ সালে। তিন সন্তান নিয়ে তারা সুখী পরিবার।





ফুটবল থেকে বিশ্রাম পেলেই পরিবারকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন ঘুরতে। খেলার অবসরে পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতে পছন্দ করেন আধুনিক ফুটবলের এই জাদুকর। স্ত্রী আন্তলেনা রোকুজ্জোকে তার সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি বলে বারবার স্বীকার করেছেন মেসি। পরিবার মেসিকে যা দিয়েছে তা কোনো ট্রফির থেকেও বেশি বলে মনে করেন মেসি।





মেসির জন্মদিনে দুর্দান্ত একটি পোস্ট দেন রোকুজ্জো তার ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে। তাতে স্বামী বা পার্টনারকে কীভাবে ভয়ংকর অবস্থার মাঝেও উজ্জীবিত রাখতে হয় তার স্পষ্ট প্রমাণ মেলে। মেসির সঙ্গে জড়িয়ে হাস্যোজ্জ্বল ওই ছবির পোস্টে নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে ‘সুখী নারী দাবি করেন তিনি। আর তা মেসির মতো মানুষের কারণেই। মেসি লিখেছেন, ‘ভালোবাসা আমার, আজ এবং সব সময় তোমাকে আমি সুখী দেখতে চাই।’ এরপরই রোকুজ্জো মন ছুঁয়ে যাওয়া কথাগুলো লিখেন, ‘শুভ জন্মদিন ভালোবাসা আমার। আমরা সবাই তোমাকে অসম্ভব ভালোবাসি। আমাকে দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী নারী বানানোর জন্য এবং আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ এমন পরিবার উপহার দেওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।’