কলম্বোয় আগের দুই ম্যাচের পিচের সঙ্গে শেষেরটা একেবারেই মিলল না। প্রথম দুই ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা দুই দলই। প্রথম ম্যাচে ৩০০ রান করে জিতেছিল লঙ্কানরা, আর ২৮৩ করে দারুণ জয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় প্রোটিয়ারা। শেষ ম্যাচেও আগে ব্যাট করা দলই জিতল। কিন্তু যে অল্প পুঁজিতেও জয় পেল, তা বিস্ময়কর। স্কোরবোর্ডে মাত্র ২০৩ তুলেও বোলারদের নৈপুণ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭৮ রানে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল শ্রীলঙ্কা। ৩০ ওভারে প্রোটিয়াদের ১২৫ রানে গুটিয়ে দেয় লঙ্কানরা, তাতে ২-১ এ সিরিজের ট্রফি হাতে নিলো তারা।





আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার দুর্দশা ছিল চোখে পড়ার মতো। তেম্বা বাভুমা চোট নিয়ে ছিটকে যাওয়ায় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কত্ব পাওয়া কেশব মহারাজ বল হাতে লঙ্কানদের ভোগাতে নেতৃত্ব দেন। ১০ ওভারে ৩ উইকেট নেন ৩৮ রান খরচায়, তিনিই সেরা বোলার। ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্ডোকে (১০) ফেরানোর পর স্বাগতিক অধিনায়ক দাসুন শানাকা (১৩) ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (৬) আউট করে মিডল অর্ডারে ভাঙন ধরান মহারাজ।





এর আগে পরে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (৩১) ও চারিথ আসালানকা (৪৭) অন্যতম সেরা অবদান রাখলেও মনে হচ্ছিল দুইশই করতে পারবে না শ্রীলঙ্কা। শেষ পর্যন্ত দুষ্মন্ত চামিরা সেই শঙ্কা দূর করেন। অভিষিক্ত মাহিশ ঠিকশানার সঙ্গে ৩২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ইনিংসের তৃতীয় সেরা ২৯ রান আসে দুষ্মন্তের ব্যাটে। শেষ উইকেটে ঠিকশানা ও প্রবীণ জয়াবিক্রমার অপরাজিত ৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০৩ রান করে স্বাগতিকরা।





শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং দুর্দশাকে ছাপিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা আরও নাস্তানাবুদ হয়। ব্যাট হাতে শেষ দিকে লঙ্কানদের রক্ষা করার পর দুষ্মন্ত বল নিয়ে শুরুতেই ঝাঁপিয়ে পড়েন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর। দ্বিতীয় ওভারে প্রবীণের শিকার হন ওপেনার এইডেন মার্করাম (২)। তারপর টানা দুই ওভারে রিজা হেনড্রিকস (১) ও রাসি ফন ডার ডাসেনকে (৫) মাঠছাড়া করেন দুষ্মন্ত।





জান্নেমান মালানকে (১৮) ফিরিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচে প্রথম উইকেট পান ঠিকশানা। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৪৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দিশাহারা প্রোটিয়ারা আর পথে ফিরতে পারেনি।





ঠিকশানা ইনিংস সেরা ২২ রান করা হেনরিখ ক্লাসেনকে প্যাভিলিয়নে পাঠান। কাগিসো রাবাদা (৮) ও মহারাজের (১৫) উইকেটও গেছে তার ঝুলিতে। এই ডানহাতি অফস্পিনার অভিষেকেই পেলেন ৪ উইকেট।





এছাড়া দুষ্মন্তের সঙ্গে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা সমান দুটি করে উইকেট পান। ম্যাচসেরা হয়েছেন দুষ্মন্ত। প্রথম দুই ম্যাচে ৭২ ও ৭৭ রান করার পর শেষ ওয়ানডেতেও ইনিংস সেরা ব্যাটিং করে সিরিজের সেরা লঙ্কান ব্যাটসম্যান আসালানকা।





এই ম্যাচে স্পিনাররা নিয়েছেন ১৬ উইকেট, যা পুরুষদের আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। স্পিনারদের পকেটে ১৯ উইকেট যাওয়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি সবার উপরে।