লাতিন আমেরিকার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার দ্বৈরথ উপভোগের অপেক্ষায় ছিল ফুটবল দুনিয়া। সাও পাওলোতে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরুও হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মিনিট না পেরোতেই ম্যাচে আসে নাটকীয় মোড়। স্থগিত হয়ে যায় বহুল প্রতীক্ষিত বিশ্বকাপ বাছাই-পর্বের ম্যাচটি।





বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে আর্জেন্টিনাকে আতিথ্য দেয় ব্রাজিল। সমর্থকরাও তাকিয়ে ছিলেন এই ম্যাচের দিকে। এমনকি মাঠেও নামেন দুই দলের দুই মহাতারকা লিওনেল মেসি ও নেইমার। কিন্তু খেলা ভেস্তে যায় ৭ মিনিটের মাথায়।





এদিকে, খেলা স্থগিত হয়ে যাওয়ার পরপরই রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় মধ্যরাতে নিজেদের বিমানে চেপে দেশে ফিরে গেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা। ধারণা করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার এড়াতেই দ্রুত দেশে ফিরেছে তারা। এর আগে ব্রাজিলে থাকা আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল স্কিওলি নিজে উপস্থিত থেকে জাতীয় দলকে সাও পাওলো বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। এতেই সন্দেহ আরও বাড়ে।





ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট গোল ডটকমের প্রতিবেদনে মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) জানা গেছে, আর্জেন্টাইন চার ফুটবলারের বিপক্ষে তদন্তে নেমেছে ব্রাজিলের পুলিশ। দেশটির কোভিড আইন অনুযায়ী, ইংল্যান্ড থেকে কেউ আসলে তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। মেসির সতীর্থ ওই চার খেলোয়াড় ইংলিশ ক্লাবের হয়ে খেলেন। তারা যথাযথ করোনাবিধি মেনে ব্রাজিলে ঢুকেছেন কিনা সেটাই তদন্তে খতিয়ে দেখবে পুলিশ।
ভক্ত-সমর্থকদের বহু প্রতীক্ষিত ম্যাচটি ভেস্তে যাওয়ার মূলে ৪টি নাম। তারা হলেন- এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া, জিওভান্নি লো সেলসো, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো।





এদিকে মেসি-নেইমারদের লড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই ব্রাজিলের স্বাস্থ্য সচেতনতাবিষয়ক সংস্থা আনভিসার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইংলিশ ক্লাবে খেলা মেসির চার স্বদেশি খেলোয়াড় যে ম্যাচটি খেলতে ব্রাজিলে ঢুকছেন, সেটি নিশ্চয়ই আগে থেকেই জানত আনভিসা। কারণ ম্যাচের তিন দিন আগেই ব্রাজিলে ঢুকেছে আর্জেন্টিনা দল।





সে ক্ষেত্রে ওই খেলোয়াড়দের খেলতে পারা-না পারা নিয়ে প্রশ্ন কেন ম্যাচের মাত্র দুই ঘণ্টা আগে তুলল আনভিসা, কেন ম্যাচ শুরু হওয়ার পর এসে ম্যাচ থামিয়ে দিল, সেসব নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায়। প্রশ্ন উঠছেও। যদিও আনভিসার ভাষ্য, ওই চার খেলোয়াড় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। আরও জানায় যে, কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম না মেনেই ব্রাজিলে খেলতে এসেছেন তারা। তবে ফুটবল সমালোচকদের মতে, যদি কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভঙ্গ করাই হয়, তাহলে কেন আগে দেখা হলো না বিষয়টি।





এর মধ্যে আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি বলছেন, ওই চার খেলোয়াড় যে খেলতে পারবেন না, সেটা ম্যাচের আগে তাদের কেউই জানায়নি। এদিকে, রোববারের (৫ সেপ্টেম্বর) বহুল প্রতীক্ষিত ম্যাচটি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর বল এখন ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কোটে। যেহেতু ম্যাচটি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ ছিল, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে ফিফা’কেই। লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের ফুটবল কর্তৃপক্ষ ‘কনমেবল’ এ ব্যাপারে কিছুই করার এখতিয়ার রাখে না।





এদিকে, গুঞ্জন উঠেছিল পুনরায় ম্যাচটি আয়োজনের। কিন্তু তাতে সাফ না করে দিয়েছেন দুই দলের দুই তারকা লিওনেল মেসি এবং নেইমার জুনিয়র। ফুটবল স্পেনার বরাতে সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) এমনটাই জানা গেছে।





অন্যদিকে, ফিফার পক্ষেও আভাস পাওয়া গেছে যে, করোনার কারণে অনেকদিন খেলা বন্ধ ছিল। আর তাই এখন ব্যস্ত শিডিউলের কারণে পুনরায় ম্যাচটি আয়োজন করা সম্ভব নয়।